বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রতিষ্ঠার এক দশকেও নির্মাণ করা হয়নি প্রধান ফটক। দ্রুত দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
প্রধান ফটক নির্মাণের দাবিতে সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি আয়োজন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে প্রায় তিন হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বাক্ষর করেছেন।
গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজক শিক্ষার্থীরা জানান, প্রধান ফটক বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের পরিচিতি বহন করে। ফটকটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি। প্রধান ফটক না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আগত অতিথিসহ দেশের বিভিন্ন আলোচিত ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষকদের মনে বিরূপ ধারণা হচ্ছে। তাছাড়া দৃষ্টিনন্দন ফটক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণার জন্ম দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হলেও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৯ সালের ৪ এপ্রিল। প্রথমে রংপুর টিচার্স ট্রেনিং কলেজে পাঠদান শুরু হলেও ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থায়ী ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করেন।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও প্রশাসনের চরম উদাসীনতায় আজও নির্মাণ হয়নি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ফটক। যদিও বিভিন্ন দিবস উদযাপনে মূল আয়োজনের বড় একটি অংশ ব্যয় হয়ে আসছে অস্থায়ী ফটক নির্মাণে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে চারটি প্রবেশপথ রয়েছে। তবে আজও নির্দিষ্ট করা হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান ফটক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড সম্বলিত প্রবেশপথের বাহিরের দুই পাশ ব্যবহৃত হচ্ছে ময়লা ফেলার স্থান হিসেবে।
দীর্ঘদিন আগে নির্মিত এসব প্রবেশপথ প্রায়ই দেখা যায় জরাজীর্ণ ও অসংরক্ষিত অবস্থায়। বাহির থেকে কোনো অতিথি আসলে বিড়ম্বনায় পড়েন খোদ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরাই।
জানা গেছে, সাবেক উপাচার্যের সময়ে একাধিকবার বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধান ফটক নির্মাণের দাবি জানানো হলেও বিষয়টি আমলে নেয়নি তৎকালীন প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাই আধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও দৃষ্টিনন্দন একটি ফটক নির্মাণ শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটক নির্মাণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য তুলে ধরা সম্ভব হবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধান ফটক নির্মাণে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরীফ হোসাইন পাটোয়ারী বলেন, প্রধান ফটক নির্মাণের কাজ পরিকল্পনার পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু হবে।
প্রধান ফটক নির্মাণ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর বরাত দিয়ে জনসংযোগ দফতরের সহকারী পরিচালক তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, প্রধান ফটক নির্মাণে ইতিমধ্যেই প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যত দ্রুত সম্ভব উচ্চপর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে ফটক নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।