স্ত্রীকে দায়ী করে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের আত্মহত্যার ঘটনায় পুরো দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যেই এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন এক স্বামী। ইতিমধ্যে মামলার দুই আসামি স্ত্রী শ্রাবণী বুশরা এশা ও তার পরকীয়া প্রেমিক মুনতাছির ইভানের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন আদালত।
গতকাল রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সদর আদালতে এ মামলা দায়ের করেন স্বামী সাদ্দাম হোসেন দীপু। আদালতের বিচারক ফারজানা আহমেদ মামলাটি গ্রহণ করেন।
এশা ঢাকার উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের সাবেক ছাত্রী ও বর্তমানে ধানমন্ডি এলাকার আনোয়ার খান মডার্ন আধুনিক মেডিকেল কলেজের প্রভাষক। আর মুনতাছির উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের ছাত্র।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সাদ্দাম হোসেন দীপু ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের উত্তর মৌড়াইল মহল্লার জহিরুল ইসলামের ছেলে। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার ( ইলেক্ট্রিক্যাল) দীপুর সঙ্গে গত ২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট রেজিস্ট্রি কাবিন করে উত্তর মৌড়াইল মহল্লার বাসিন্দা জেড এম ইমরান আলীর মেয়ে শ্রাবণী বুশরা এশার সঙ্গে বিয়ে হয়। দীপু তার অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে গেলে তার স্ত্রী এশার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য আসামি মুনতাছির তার বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে দীপু তার অফিসের কাজে কর্মস্থলে ছিলেন। এদিন এশা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তার বাবার বাড়িতে মুনতাছিরের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আরিফুল হক মাসুদ বলেন, সাধারণত এ ধরণের মামলা আদালত আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়ে থাকেন। কিন্তু পরকীয়ার ঘটনায় চট্টগ্রামে চিকিৎসক আত্মহত্যার কারণে আদালত এ ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ভোরে নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকায় নিজবাসায় নিজের শিরায় বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা করেন আকাশ। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর নন্দনকানন এলাকা থেকে স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে তার খালাতো ভাইয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এরপর মিতুর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আমানত শাহ (র.) মাজার এলাকা থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে আকাশের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করে পুলিশ।
আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে দুটি স্ট্যাটাস দিয়ে মৃত্যুর জন্য স্ত্রী মিতুকে দায়ী করেন এবং বিস্তারিত ঘটনার আবেগঘন বর্ণনা দেন আকাশ।