Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রাণীনগরে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ

এফ এম আবু ইউসুফ রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৭:২৬ PM
আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৮:৫৪ PM

bdmorning Image Preview


দেশের উত্তর জনপদের ধান উৎপাদনের জেলা নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় অন্যান্য কৃষি ফসলের পাশাপাশি চলতি মৌসুমে সুস্বাদু পুষ্টিকর রসালো ফল মাল্টা চাষ বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছেন রাণীনগর উপজেলার বেতগাড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে মাসুদুর রহমান (৪৭)।

তার এই সফল চাষ দেখে এলাকার বেকার যুবকরাও অন্যান্য ফসল চাষের পাশাপাশি মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। মাসুদুরের বাগানে গেলে সবুজ রঙের মাল্টা দেখে চোখ ফিরাতে মন চায় না। প্রায় প্রতিটি গাছের ডোগায় সারি সারি মাল্টার থোকা গাছে ঝুলছে। দিন যতই যাচ্ছে ততই আকৃতিতে মাল্টা বড় হয়ে ওজন বাড়ার সাথে মূল্যও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সুস্বাদু রসালো এই মাল্টা স্থানীয় বাজার সহ এলাকার বিভন্ন হাটে-বাজারে ব্যাপক চাহিদার সাথে বিক্রি হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাসুদের বাগানে ফল ভালো হওয়ায় প্রথম বছরেই লাভের পরিমাণ ভাল হবে বলে এমনটায় আশা করছেন তিনি।

কৃষি বিভাগ বলছে, রাণীনগর উপজেলার বিশেষ কয়েকটি এলাকায় বারি-১ মাল্টা চাষের উপযোগী জমি রয়েছে। যেখানে কৃষকরা ধানের পাশাপাশি মাল্টা চাষও শুরু করেছে। তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভালো জাতের মাল্টা গাছের চারা রোপণ করতে পারলে এবং নিবিড় পরিচর্যায় মাল্টার ফলন ভালো হয়। মাল্টা চাষ লাভজনক হওয়ার কারণে রাণীনগরে এ বছর প্রায় তিন হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে।

মাসুদুর রহমান ১৯৮৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর কলেজে ভর্তি হয়ে লেখা-পড়ার পাশাপাশি বাড়ির পাশে পৈত্রিক জমিতে স্বল্প পরিমাণে নানা জাতের সবজি ও ফলদ জাতীয় বৃক্ষের চাষ শুরু করেন। ১৯৯০ সালে তার বাবা মারা যাওয়ার পর চার ভাই বোনের সংসারের পুরো দ্বায়িত্ব তার কাঁধে পড়ে। এক পর্যায়ে তার লেখা-পড়া বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর সংসারের কিছু আয়ের জন্য বেকার বসে না থেকে কৃষি অফিসের পরামর্শে বাণিজ্যিকভাবে প্রায় এক একর জমির উপর বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজি ও ফল-মূল যেমন- পেঁপে, করলা, ঢেঁড়শ, পেয়ারাসহ নানা জাতের ফসলের আবাদ শুরু করলে ভাল ফলন ও উপযুক্ত দাম পেয়ে লাভবান হতে থাকে। সবজি চাষে কোন রকমে পুঁজি ফেরত পেলেও ২০১৭ সালের শেষের দিকে তার নিজের আরো এক একর জমির উপর মাল্টা চাষ শুরু করে।

বর্তমানে তার প্রায় তিন একর জমিতে মাল্টাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ পুরোদমে চলছে। তিন একর জমিতে মাল্টা চাষে চারা কেনা থেকে ফল ধরা পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যেই বাগান থেকে স্বল্প পরিমাণ মাল্টা তুলে বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি মাল্টা একশ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে মাসুদুর রহমান তার বাগান থেকে মাল্টা বিক্রি করে বেশ লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: শহিদুল ইসলাম জানান, মাল্টা পুষ্টিকর একটি ফল। মাসুদের মাল্টা বাগান খুব ভাল হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক যথাযথ পরামর্শ, যথা সময়ে ভাল পরিচর্যা করার ফলে রোগ-বালাই না থাকায় বারি-১ জাতের মাল্টা চাষে ভাল ফলন হচ্ছে। পাশাপাশি বাজারে এই ফলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভাল দাম পেয়ে তিনি লাভবান হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Bootstrap Image Preview