Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কোলকাতায় পুলিশ-সিবিআই সংঘর্ষ, উত্তপ্ত পার্লামেন্ট

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৩:৫৮ PM
আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৩:৫৮ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


কলকাতায় পুলিশ ও সিবিআই সংঘাতের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতীয় পার্লামেন্ট। আজ সোমবার সকাল থেকেই লোকসভার উভয় কক্ষে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল সাংসদরা। বিক্ষোভের জেরে বেলা ১২টা পর্যন্ত লোকসভা মুলতবি করেন স্পিকার। একই পরিস্থিতি ছিল রাজ্যসভাতেও। সেখানেও স্পিকার বেঙ্কাইয়া নায়ডু দুপুর দুটো পর্যন্ত মুলতবি করে দেন অধিবেশন। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের এই বিরোধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে বিরোধীরা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমারকে জেরা করার জন্য গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় সিবিআইয়ের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসিপি) তথাগত বর্ধনের নেতৃত্বে কলকাতার লাউডন স্ট্রিটে তার বাসভবনে যায় ৪০ জনের বেশি একটি সিবিআইয়ের টিম।

অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সারদা ও রোজভ্যালি চিটফান্ডে রাজীব কুমারের সম্পর্ক ছিল। সেই বিষয়েই তাকে জেরা করতে এদিন সিবিআই কর্মকর্তারা তার বাসভবনে যান। সিবিআইয়ের সদস্যরা পুলিশ কমিশনারের বাড়ির গেটের কাছে যেতেই বাধা দেয় কলকাতা পুলিশের বিশাল বাহিনী। শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি। পরে সিবিআইয়ের ডিসিপি তথাগত বর্ধনসহ কর্মকর্তাদের জোর করে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি থানায়।

ঘটনার জেরে ধর্মতলায় ‘সত্যাগ্রহ’ করতে বসেন মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্মতলার ধর্না মঞ্চ থেকে মমতা তৃণমূল কর্মীদের নির্দেশ দেন জেলায় জেলায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জন্য। পাশাপাশি, দিল্লিতে আন্দোলনের সুর চড়া করতেও নির্দেশ দেন তিনি। দলীয় নেত্রীর নির্দেশ মতোই এ দিন সকাল থেকেই সংসদে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদরা। প্রথমে সংসদের বাইরে প্রতিবাদ দেখান তারা। বেলা ১১টা সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার পরই সেখানে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল সাংসদরা। রীতিমতো ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন করেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন তাঁরা। তৃণমূল সাংসদদের বিক্ষোভের জেরে বেলা দুটো পর্যন্ত মুলতবি করে দেওয়া হয় রাজ্যসভা। পাশাপাশি, লোকসভাতেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূলের বিক্ষোভের জেরে মুলতবি হয়ে যায় লোকসভাও।

এদিকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের এই সংঘাতে এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতার পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরোধীরা। এই ঘটনায় দেশের সংবিধানকে রক্ষা করার দাবিতে সমস্ত বিরোধীদের পাশে চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন মমতা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী রোববার রাতেই টুইট করে মমতার পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বলেন, আমরা একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলব। বাংলায় যেটা হচ্ছে সেটা আসলে ভারতের স্বাধীন সংস্থাগুলোর ওপর মোদি ও বিজেপির আক্রমণের একটি অংশ। বিরোধীরা প্রত্যেকেই এই ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

রবিবার রাতেই মমতার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ভারতের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও তেলেগু দেশম পার্টির সভাপতি (টিডিপি) চন্দ্রবাবু নাইডু, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লাহ, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির সভাপতি শারদ পাওয়ার, ভারতের বিহার রাজ্যের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল নেতা তেজস্বী যাদব এবং উত্তরপ্রদেশের চারবারের মুখ্যমন্ত্রী ও বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী। প্রত্যেকেই মমতার অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছেন।

Bootstrap Image Preview