রাজধানীতে সাড়ে ৪ হাজার পিস ইয়াবা সহ দুই কিশোরকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। মো. জসিম (১৩) ও মো. শাহাজাহান (১৪) নামে দুই কিশোরের পেট থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়।
এর আগে মিরপুরে ইয়াবা সরবরাহ করার সময় লোকমান ও রঞ্জু নামে দুজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে এ দু’জনের তথ্যের ভিত্তিতে ওই দুই কিশোরকে আটক করা হয়।
এদের মধ্যে লোকমানের দায়িত্ব ছিল ইয়াবা বাহকদের আস্তানায় নিয়ে গিয়ে বিশেষ একটি সিরাপ খাইয়ে ইয়াবা বের করে সরবরাহের জন্য প্রস্তুত করা। আর রঞ্জুর দায়িত্ব ছিল বিভিন্ন স্পটে ইয়াবা পৌঁছানো। লোকমান ও রঞ্জুকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে কেরানীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে কাগজের কার্টন থেকে উদ্ধার করা হয় ২৫ হাজার পিস ইয়াবা। এ চক্রের মূলহোতা স্বপন নামে এক ব্যক্তি। তিনি পলাতক রয়েছেন। তাকে ধরতেও চলছে অভিযান।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,রবিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ডিএমপির গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের দুটি টিম রাজধানীর শাহ আলী ও মিরপুর থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে দুই কিশোরসহ আরো ৬ জনকে আটক করেন।
কিশোর জসিম ও শাহজাহান ছাড়াও আটককৃত অন্যরা হলেন- লোকমান হোসেন,মো. রঞ্জু, শাহিদা বেগম,ইউনুছ মিয়া,মোছা. শাহনাজ বেগম ও মারিয়া আক্তার রিনা।
সূত্রটি জানায়, টেকনাফ থেকে ঐ দুই কিশোরের পেটে ইয়াবাগুলো টেপ পেচিয়ে বিশেষ কৌশলে ক্যাপসুল বানিয়ে খাওয়ানো ছিল। আর এজন্য মোটা অঙ্কের অর্থের প্রলোভনও দেখানো হয়েছিল তাদের। তবে মিরপুর এলাকায় পৌঁছালে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তারা দুজন।
এরপর তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ইয়াবা বহনের বিষয়টি অস্বীকার করে শাহজাহান। কিন্তু তার অপর সহকর্মী জসিম ক্যাপসুল খাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তাদের এক্সরের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে পেটে ক্যাপসুল রয়েছে। তারপর বিশেষ উপায়ে তাদের পেট থেকে ক্যাপসুলগুলো বের করা হয়।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এডিসি ওবায়দুর রহমান জানান,বিশেষ কৌশলে পাকস্থলীতে করে টেকনাফ থেকে ইয়াবা নিয়ে আসছিল জসিম ও শাহজাহান। আগে থেকে তথ্য পাওয়ায় দারুসসালাম থানাধীন এলাকায় অবস্থান নেয় গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর তাদের সেখান থেকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যে কেরানীগঞ্জের একটি বাসা থেকে আরও ২৫ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, কিশোর জসিম ও শাহজাহান টেকনাফ থেকে ইয়াবা পেটে করে নিয়ে আসে। ৫০ থেকে ৬০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট একসঙ্গে করে ক্যাপসুল বানানো হয়। অতঃপর ৫০-৬০টি ক্যাপসুল খেয়ে পেটে করে পাচার করে ঢাকায় নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন,চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে ইয়াবা বহনকারী দুই কিশোরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলেও চট্টগ্রামের মূল ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা যায়নি। তবে খুব শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।