Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ রবিবার, মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ধর্ষণ তাদের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৫৬ AM
আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৫৬ AM

bdmorning Image Preview


উত্তর কোরিয়ার নারী সেনা সদস্যদের জীবন দুর্বিসহ। অপুষ্টিতে ভোগা সেসব নারীদের কাছে ধর্ষণ নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এমনকি বেশির ভাগের মাসিক ঋতুস্রাব পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। এমনই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন লি সো ইয়ন নামে এক উত্তর কোরিয়ার এক প্রাক্তন সেনা।

তিনি জানিয়েছেন, প্রায় ১০ বছর ধরে লি সো ইয়নকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছিল। যে ঘরটা তাকে শেয়ার করতে হত সেখানে আরও জনা পঁচিশেক নারীর সঙ্গে। ড্রয়ারের ওপরে রাখতে হত ফ্রেমে বাঁধানো দুটো করে ফোটোগ্রাফ। একটি কিম জং উনের পূর্বসুরী কিম ইল-সুংয়ের ও অপরটি তার উত্তরসূরী, প্রয়াত কিম জং-ইলের।

নারী সেনাদের ঠিকভাবে স্নান করার পর্যন্ত সুযোগ ছিল না। ঘামের গন্ধে অস্থির হয়ে যেতে হত। কাপড় চোপড় কাচা, পরিষ্কার করা বা রান্না বান্নার মতো বেশ কিছু গৃহস্থালির কাজও করতে হত তাদের। পরিশ্রমের পরও পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়তেন তারা। 

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বাহিনীতে ঢোকার ছমাস থেকে এক বছরের মধ্যে আমাদের আর ঋতুস্রাব হত না। চরম অপুষ্টি আর ভীষণ একটা মানসিক চাপের পরিবেশে থাকতাম বলেই সে রকমটা হয়েছিল। নারী সৈনিকরা অবশ্য বলত তাদের মাসিক ঋতুস্রাব হচ্ছে না বলে তারা খুশি। খুশি, কারণ পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে তার ওপর আবার ঋতুস্রাব হলে তাদের আরও শোচনীয় অবস্থার ভেতর পড়তে হত।

লি সো ইয়ন আরও জানিয়েছেন, মাসিক ঋতুস্রাবের দিনগুলো নারী সেনারা কীভাবে পার করবে, তার কোনও ব্যবস্থাই বাহিনীতে ছিল না। এমনও হয়েছে, লি সো ইয়ন ও তার নারী সহকর্মীদের বাধ্য হয়ে অনেক সময় একজনের ব্যবহার করা স্যানিটারি প্যাড আবার অন্য একজনকে ব্যবহার করতে হয়েছে। লি সো ইয়ন যদিও স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন, ২০১৫ সালে উত্তর কোরিয়া নিয়ম করেছে যে ১৮ বছর বয়সের পর সে দেশে সব মেয়েকেই বাধ্যতামূলকভাবে সাত বছর সামরিক বাহিনীতে কাজ করতে হবে।

গবেষকদের তারা কেউ কেউ জানিয়েছেন, অনেক সময় পুরুষ সহকর্মীদের সামনেই তাদের প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয়। এর ফলে তাদের ওপর যৌন হামলার ঝুঁকিও বাড়ে, কিন্তু তাদের কিছু করার থাকে না। উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীতে যৌন নির্যাতন ও লাঞ্ছনার ঘটনাও ঘটে ব্যাপক হারে। 

অনেকেই ধর্ষণের শিকার হয়ে থাকেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় ধর্ষিতা নারী সেনারা কেউ ভয়ে সাক্ষ্য দিতেই এগিয়ে আসে না। ফলে ধর্ষণকারী পুরুষদেরও কোনও সাজা হয় না কখনওই, এমনটা জানিয়েছেন জুলিয়েট মরিলট নামে এক গবেষক।

Bootstrap Image Preview