ভাষা আন্দোলনই স্বাধীন বাংলাদেশের মূল ভিত্তি। ভাষা আন্দোলন না হলে বাংলাদেশ সৃষ্টি হতো না। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দিন আহমেদ, আবুল হাশেম ভারতবর্ষে তিনটি স্বাধীন রাষ্ট্র চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ।
ধানমন্ডিতে ভাষা আন্দোলন গবেষণা কেন্দ্র ও জাদুঘর আয়োজিত মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ভাষা আন্দোলনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী, দলিলপত্র ও বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগের সময় পাকিস্তান, ভারত ও বাংলা ভাষাভাষীদের নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র চেয়েছিল জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দিন আহমেদ, আবুল হাশেম।
জাতির পিতা চেয়েছিল পাকিস্তান হবে দুইটা। লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে বাংলা ও আসাম নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং পশ্চিম পাকিস্তান স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হবে পাঞ্জাব বেলুচিস্তান সীমান্ত ও সিন্ধু প্রদেশ নিয়ে। অন্য রাষ্ট্রটি হবে হিন্দুস্তান।
হারুন-অর-রশিদ বলেন, ভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালে শুরু হলেও এর কার্যক্রম আগে থেকেই ছিল। সেটা সতের শতাব্দির কবি আব্দুল হাকিমের লেখাতে পাওয়া যায়। তিনি বঙ্গবাণী কবিতা লিখেছেন..
যেসব বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী
সেসব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।
দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে ন জুয়ায়,
নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশ ন যায়?
মাতা পিতামহ ক্রমে বঙ্গত বসতি
দেশী ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি।
তিনি আরো বলেন, অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষাসৈনিকদের অবশ্যই আমন্ত্রণ করতে হবে। ভাষা সৈনিক হচ্ছে প্রথম মুক্তিযোদ্ধা। তাদের এই মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্রের একান্ত কর্তব্য।
ধানমন্ডির ভাষাসৈনিক কাজী গোলাম মাহবুব সড়কে আজ ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ আলোকচিত্র প্রদর্শনী চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সর্বদলীয় ভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ভাষা সৈনিক কাজী গোলাম মাহবুব স্ত্রী পিয়ারী মাহাবুব।
ভাষাসৈনিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মরমিকবি সাবির আহমেদ চৌধুরী, সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, শামসুল হুদা, খলিল কাজী ওবিই, ড. জসীম উদ্দিন আহমদ, খাজা মহিউদ্দীন, রেজাউল করিম, শরিফা খাতুন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোমতাজ উদ্দিন আহমদ, ভাষা আন্দোলন গবেষণাকেন্দ্র ও জাদুঘরের নির্বাহী পরিচালক এম আর মাহবুব, মহুয়া মাহবুব খান, সৈয়দ জিয়াউল হক, ডা. এম এ মুক্তাদীর, সৈয়দ নাজমুল আহসান প্রমুখ।