প্রখ্যাত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির মতো ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনীতিবিদ মান আল-জারাবাকেও হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে দেশটির গণমাধ্যমের এক সাক্ষাতকারে জানান তিনি।
মান আল-জারাবা সৌদি সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল হরকাতুল কারামার (মুভমেন্ট ফর ডিগনিটি) নেতা।
মান আল-জারাবা বলেন, তিনি খাশোগিকে হত্যার ১০ দিন আগে লেবাননের সৌদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন। তবে সেদিন তার সঙ্গে একাধিক দেহরক্ষী ছিল। আর সে কারণেই তিনি রেহাই পেয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই তাদের প্রতিবেদনে জানায়, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন আগে ২২ সেপ্টেম্বর জারাবা বৈরুতের সৌদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন। সেখানে জারাবাকে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তারা।
ইস্তানবুলের সৌদি কূটনীতিকরাও ব্যক্তিগত কাজ বাদে খাশোগির সঙ্গে একই ধরনের কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন।
বহু বছর ধরে শেখ মান আল-জারাবাকে কালো তালিকায় রাখার পর বৈরুতের সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তারা হঠাৎ তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সঙ্গে আলোচনা করতে চান।
কয়েকটি ফোনালাপের পর জারাবা সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে রাজি হলেও সৌদি সরকারের নিষ্ঠুর আচরণের বিষয়টি বিবেচনা করে তিনি জানান, দূতাবাসে নয়, বরং কোনো রেস্টুরেন্ট বা ক্যাফেতে এ আলোচনা হতে হবে।
পরে সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তারা দূতাবাসেরই মালিকানাধীন একটি ভবনে এক বৈঠকের আয়োজন করেন। তবে জারাবা তিনজন সশস্ত্র দেহরক্ষীসহ সেখানে যান এবং আরও একদল সশস্ত্র দেহরক্ষীকে বাইরে প্রস্তুত থাকতে বলেন।
তবে দূতাবাস কর্মকর্তারা জারাবার সঙ্গে সশস্ত্র দেহরক্ষীদের দেখে বিস্মিত হন। এর পর বৈঠকে সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তারা জারাবাকে বলেন, দেশে ফিরে গেলে রিয়াদ সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবে না।
কিন্তু তাদের এ আশ্বাসে জারাবা সন্তুষ্ট হতে পারেননি এবং পরে এ ধরনের আরও বৈঠকের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেদিনের সাক্ষাৎ শেষ করেন।
আর এ বৈঠকের ১০ দিনের মাথায় ইস্তানবুলে খাশোগি নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর জারাবা বুঝতে পারেন, তিনি যদি সব ধরনের প্রস্তুতি না নিতেন, তা হলে নিজেও এ পরিস্থিতির শিকার হতেন।