Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাসিয়া নদী খননের নামে চলছে তীর ভরাট

পাভেল সামাদ, বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:০০ PM
আপডেট: ২৯ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:০০ PM

bdmorning Image Preview


খননের নামে গলাটিপে যেন হত্যা করা হচ্ছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাসিয়া নদী। মৃতপ্রায় এ নদীটির তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই তৃতীয় দফায় চলছে এর খনন কাজ। সঠিক মাপে খনন না করে অপরিকল্পিতভাবে দায়সারা ভাবে কাজ করে নদীর মাটি নদীতেই ফেলে ভরাট করা হচ্ছে দু'তীর।

এরফলে একদিকে যেমন আরও ছোট করে ফেলা হচ্ছে নদীটিকে, তেমনি করে সুযোগ তৈরি করে দেয়া হচ্ছে জায়গা দখলের। খননের নামে বাসিয়া নদীকে নিয়ে কর্তৃপক্ষের এমন তামাশার কাজ ক্ষুব্ধ করেছে বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীকে। তারা বাসিয়ার দু'তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও সঠিক মাপে নদী খননের জন্য ফের জোর দাবি তুলেছেন।

জানা গেছে, ২০১৬-২০১৭ ইং অর্থ বছরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে বিশ্বনাথ এলাকায় ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে 'বাসিয়া নদী পুনঃখনন প্রকল্প' বাস্তবায়নের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার এই খনন কাজটি পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সামছুর রহমান এন্টারপ্রাইজ।

ইতিপূর্বে দু'বার এর খনন কাজ হয়েছে। নদীর উত্তর তীর হতে দক্ষিণ তীরে ফিতা দিয়ে মেপে ৩৩ মিটার (১'শ ৯ ফুট) সীমানা নির্ধারণ করা হলেও দু'বারই সঠিক মাপে খনন হয়নি বলে অভিযোগ উঠে। অভিযোগ উঠে খননের নামে ঘাস চাটাইয়ের এবং নদী তীরের বিশাল সব গাছ কাটার। বাসিয়া নদীর দু'তীরের ১৮৭ জন অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের উচ্ছেদ মামলার (নং-৪/২০১৭-বিশ্বনাথ) প্রেক্ষিতে কয়েকজন দখলদারদের দায়ের করা হাইকোর্টের রিট পিটিশনের কারণে দু'দফা খনন কাজের সময় বহাল থাকে অবৈধ স্থাপনাগুলোও।

এবার তৃতীয় দফায় খনন কাজ শুরু হলে ফের উঠে অভিযোগ। এবারও সঠিক মাপে খনন না করে বরং খনন করা মাটি নদীর তীরে ফেলে গলাটিপে হত্যা করা হচ্ছে বাসিয়াকেই-এমন অভিযোগ তুলেছেন উপজেলাবাসী। 

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে খনন কাজ পরিদর্শনে গেলে পাওয়া যায় এমন অভিযোগের সত্যতা। দেখা যায়, নদীর তীর থেকে মাটি খনন করে তীরেই ফেলা হচ্ছে। 

'বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদ'র আহবায়ক ফজল খান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসলেও নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই চলছে নদী খনন। তাও আবার খননের নামে চলছে উপজেলাবাসীর সাথে তামাশা। খনন করা মাটি নদীতীরেই ফেলে পক্ষান্তরে এটিকে আরও ছোট করে ফেলা হচ্ছে। ভরাট করে দেয়া হচ্ছে নদীতীর। এর ফলে লাভবান হবে দখলদাররাই।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সামছুর রহমান এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে তৃতীয় দফা খনন কাজটি পাওয়া সাধনা এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার বাদল সরকার বলেন, খনন করা মাটি আপাতত নদীতীরে ফেলা হলেও ইউএনও স্যারের দায়িত্বে থাকায় এগুলো আমরা সরাতে পারছি না। তবে, খুব শিগগিরই এগুলো সরানো হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, নদীতীরের মাটিগুলো সরানো হবে। অবৈধ স্থাপনা নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সেগুলো উচ্ছেদ করে নদীতীরের অবশিষ্ট অংশও খনন করা হবে।


 

Bootstrap Image Preview