Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ রবিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন নিয়ে মুখ খুললেন সুলতান মনসুর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০১৯, ০৭:২৭ PM
আপডেট: ২৯ জানুয়ারী ২০১৯, ০৭:২৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শপথ না নিলেও শপথ নেবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আবার আওয়ামী লীগে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন সুলতান মো. মনসুর আহমেদ।

ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্তে অনঢ়। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেও ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নেয়ার বিষয়ে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, আমি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছি। তবে সরাসরি বিএনপি থেকে নির্বাচন করিনি।

‘ধানের শীষ ঐক্যফ্রন্টের প্রতীক। যেহেতু নির্বাচন করব, তাই এ প্রতীক নিয়েছিলাম’-যোগ করেন মনসুর।

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, বিএনপি তাদের সিদ্ধান্ত নেবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও সিদ্ধান্ত নেবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে তো সবাই আলাদা দল। আমাদের সিদ্ধান্ত ‘অবশ্যই পজিটিভ’ হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মনসুর বলেন, ঐক্যফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নিলেও সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে আমাদের স্বাধীন চিন্তার অধিকার আছে। আমার এলাকার ভোটারদের কথা ভাবতে হবে। তারা কেন আমাকে নির্বাচিত করেছে। ধানের শীষ প্রতীকে আপনি নির্বাচিত হয়েছেন, বিএনপির সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নিলে আইনি কোনো সমস্যা হবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এটি কোনো সমস্যা হবে না।

বিএনপি যদি সংসদে যেত, আর আমি যদি তাদের বিরুদ্ধে সংসদে ভোট দিতাম, সে ক্ষেত্রে সমস্যা হতো। এখন যেহেতু বিএনপি সংসদে যাচ্ছে না। তাই আমার শপথে কোনো সমস্যা হবে না। আমি তো গণফোরামের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছি। আমার এলাকার জনগণ আমাকে ভোট দিয়েছে সংসদে কথা বলার জন্য। তাদের জন্য কাজ করতেই আমাকে সংসদে যেতে হবে।

তিনি কোনো দলে যোগদান করেননি উল্লেখ করে সুলতান মনসুর বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে আমাকে কেউ বের করে দেয়নি। আর আমি কোনো দলে যোগদানও করিনি। আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। গণফোরাম থেকে নির্বাচনে গেছি। কারণ গণফোরামে বঙ্গবন্ধুর চিন্তার মিল আছে।

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, আমরা কখনও বলিনি শপথ নেব না। ড. কামাল হোসেনও বলেছেন- শপথ নেয়ার ব্যাপারে আমরা ইতিবাচক। আর এটিই আমাদের কথা।

এর বাইরে অন্যরা কে কী বলছেন, তা আমি জানি না। সময় তো আছে, তাড়াহুড়ার কিছু নেই। ৯০ দিনের মধ্যে শপথ নিলেই হবে। তিনি বলেন, জনগণ শত প্রতিকূলতায় অনেক ত্যাগ স্বীকার করে আমাদের নির্বাচিত করেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি আমাকে ডাকে তা হলে চিন্তা করতে পারি। কারণ আমাকে তো আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়নি।

এদিকে, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুলতান মনসুর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকও হয়েছিলেন।

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার মধ্যে সংস্কারপস্থি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে দলে অপাঙক্তেয় হওয়ার পর কামাল হোসেনের সঙ্গে ভেড়েন তিনি।

জনগণের মতামত মূল্য দিতে শপথ নিচ্ছেন জানিয়ে সুলতান মনসুর বলেন, আমি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ হয়ে বিশ্রামে আছি। এই সময়টাতে আমার নির্বাচনী এলাকা জনগণ, যারা শত ঝুঁকি নিয়েও আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।

তিনি বলেন, সারাদেশের অনেক নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের মতও আমি নিয়েছি। আমি একজন মানুষও পাইনি যিনি আমার শপথের বিপক্ষে। সবাই একবাক্যে বলেছেন আমার নির্বাচনী এলাকার জনরায়কে মূল্য দিয়ে শপথ নিতে। যেহেতু জনগণের জন্য রাজনীতি করি সেহেতু জনগণের মতামতকে মূল্য দিতে হবে।

‘আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের যেমন আমার প্রতি প্রত্যাশা রয়েছে, তেমনি আমারও দায়বদ্ধতা রয়েছে তাদের মতের প্রতি’-যোগ করেন সুলতান মনসুর।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮ আসনে নিরঙ্কুশ জয় পায়। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পায় ৮টি আসন। নির্বাচনে ভোট ডাকাতির ও ব্যালট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত প্রার্থীরা শপথগ্রহণ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্তে রয়েছেন।

ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক দল বিএনপির নির্বাচিত প্রার্থীরা শপথ নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন প্রথমে শপথের পক্ষে সায় দিলেও ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

Bootstrap Image Preview