কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সার্ভার জটিলতায় বিপাকে জন্মনিবন্ধন প্রত্যাশীরা। সার্ভার স্লো থাকার কারণে গত একমাস যাবত ভৈরব পৌরসভা এলাকায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান, পৌরসভার স্যানিটারী পরিদর্শক নাসিমা বেগম।
বর্তমানে প্রায় সহস্রাধিক আবেদন অফিসে পড়ে আছে কিন্ত আবেদনকারীদের জন্মনিবন্ধন করতে পারছে না। ফলে পৌর নাগরিকরা পড়েছে বিপাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদেরকে ভর্তির জন্য নিয়ে গেলে শিক্ষকগণ জন্মনিবন্ধন ছাড়া ভর্তি করছে না। ফলে অনেক অভিভাবকরা তাদের শিশুদেরকে স্কুলে ভর্তি করতে পারছেনা।
এছাড়াও অনেক নাগরিক বা প্রবাসীরা জরুরী প্রয়োজনে পৌরসভার অফিসে গেলে জন্মনিবন্ধন না পেয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। অনেক প্রবাসী আবেদন করেও জন্মনিবন্ধন না পাওয়াই বিদেশে তাদের বৈধতার কাগজপত্র তুলতে পারছে না বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, ভৈরব পৌরসভা এলাকায় ২ লাখেরও বেশি নাগরিকের মধ্য মঙ্গলবার পর্যন্ত জন্মনিবন্ধন করেছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪'শ ৪৬ জন। প্রতিদিন মানুষ জন্ম নিচ্ছে এবং প্রতিবছর ভৈরবের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রায় ২ হাজার কোমলমতি শিশুরা ভর্তি হচ্ছে।
বর্তমানে প্রাথমিক স্কুলে শিশুরা শিক্ষার জন্য ভর্তি হলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট দাবি করে। অনেক অসচেতন নাগরিকরা স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে জন্মনিবন্ধন করে না। এজন্য বছরের শুরুতে স্কুলে ভর্তি হবার সময় হলেই জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট আনতে গিয়ে এখন বিপাকে রয়েছে।
পৌরসভার নিবন্ধন বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর বোলায়েত করিম সানি জানান, জানুয়ারী মাস এলেই জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট দেয়ার চাপ বেড়ে যায়। গত এক মাস যাবত সার্ভার স্লো থাকায় প্রতিদিন ১০/১৫ টির বেশি জন্মনিবন্ধন করা যাচ্ছে না। জরুরী প্রয়োজনে প্রতিদিন মধ্যরাতে ১০/১৫ টি নিবন্ধন করা যায়। পৌরসভার কর্মচারীরা দিনে ডিউটি করে কিন্ত মধ্যরাতে কোন কর্মচারী কাজ করতে চাই না। অথচ আবেদন পড়ে আছে প্রায় সহস্রাধিক।
পৌরসভার স্যানিটারী ইন্সপেক্টর নাসিমা বেগম জানান, একমাস আগে প্রতিদিন অফিসে শতাধিক জন্মনিবন্ধন করা হয়েছে। বিষয়টি পৌর চেয়ারম্যানকে অবহিত করার পর তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানালেও এখনও পর্যন্ত কোন ফল হচ্ছে না। শিশুরা ছাড়াও অনেক প্রবাসী জন্মনিবন্ধন করতে এসে এখন বিপাকে রয়েছে বলে জানান তিনি।
ভৈরব পৌরসভার মেয়র এডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ জানান, বর্তমান ডিজিটাল যুগে প্রতিটি নাগরিকের জন্মনিবন্ধন জরুরী বিষয়। সার্ভার স্লোর বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগের ঢাকা অফিস নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এ ব্যাপারে পৌরসভা থেকে লিখিতভাবে জানানো হলেও এখনও কাজ হচ্ছেনা। তাই অনেকেই বিপাকে রয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের ঢাকা অফিসের জেনারেল রেজিষ্ট্রার মানিক লাল বণিক টেলিফোনে জানান, সারাদেশে নিবন্ধনসহ অন্যান্য কাজে ৫ হাজার অফিস রয়েছে। দিনের বেলায় সবাই একযোগে কাজ করলে সার্ভার স্লো হয়ে যায়। সার্ভার আপগ্রেড করার জন্য কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। আপগ্রেড করতে কয়েকমাস সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।