Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ডিএনএ বিবর্তনে ফিরে আসতে পারে ডাইনোসর!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:০৫ PM
আপডেট: ২৮ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:০৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


সত্যিই কি তবে ফিরে আসতে যাচ্ছে বিলুপ্ত হওয়া সেই দৈত্যাকার ডাইনোসররা? পৃথিবীতে ফের দাপিয়ে বেড়াবে ভয়ংকর মাংসাশী টিরানোসরাসরা? হালের দু-একটি আবিষ্কারে সেই সম্ভাবনা বা আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জুরাসিক যুগের একটি গাছের কোটরে থাকা হলদেটে-বাদামি রঙের অ্যাম্বারের মধ্যে মিলেছে মশার জীবাশ্ম (ফসিল), যার মধ্যে পাওয়া গেছে প্রাণ সৃষ্টির প্রধান বীজ ডিএনএ।

শুধু তাই নয়, ডাইনোসরের আরেক জীবাশ্মে হদিস মিলেছে রক্তনালি ও কোলাজেন নামের বিশেষ এক ধরনের প্রোটিনের। ফলে সেই সব থেকে কোটি কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ডাইনোসরদের ফিরিয়ে আনা যাবে কি না- সেই কৌতূহলের জন্ম হয়েছে।

একেবারেই তা অসম্ভব, বিজ্ঞানীরা কিন্তু সে কথা বলছেন না। ‘আজগুবি’ বলে উড়িয়েও দিচ্ছেন না সেই সম্ভাবনা বা আশঙ্কা। কারণ, বিবর্তনের নিয়মেই ডাইনোসররা হারিয়ে গিয়েছে। এরপর বিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই উন্নততর প্রাণের জন্ম ও বিকাশ হয়েছে পৃথিবীতে। তবে সেই বিবর্তনের রথের চাকার কোনো নির্দিষ্ট দিক নেই। এমন তো নিশ্চিত করে বলা যায় না যে সেই চাকা ডাইনোসর যুগ থেকে মানবসভ্যতার দিকে বা এর চেয়ে উন্নততর কোনো প্রাণীর দিকে এগিয়ে চলেছে।

ব্রিটেনের নর্দাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনতত্ত্ববিদ জামাল নাসিরের কথায়, ‘অসম্ভব নয়। কারণ, বিবর্তন প্রক্রিয়ার কোনো সুনির্দিষ্ট দিক নেই। এমন নয় যে তা শুধুই সামনের দিকে এগিয়ে যায়। বলা যায় না, তা শুধু পূর্ব থেকে পশ্চিম বা উত্তর থেকে দক্ষিণে গড়িয়ে চলেছে। কোন দিকে যাবে বিবর্তনের রথের চাকা, তা আগে থেকে ঠিক করা থাকে না। তার গতিপথ একেবারেই পরিকল্পিত নয়। বরং তা ভীষণ পাগলাটে। তাই জীবাশ্ম থেকে ডাইনোসরদের একেবারেই ফিরিয়ে আনা যাবে না, এটা মনে করি না। সেই সম্ভাবনাটা কমও নয়।’

নাসির এও জানিয়েছেন, সেই ডাইনোসরদের ফিরে আসার জন্য যথাযথ পরিবেশেরও প্রয়োজন। আমাদের জিনোমে আচমকা একটা বড়সড় রদবদল ঘটে গেলেই সেটা সম্ভব হয়ে যেতে পারে।

নাসিরের ওই বক্তব্য অবশ্য মানতে রাজি নন লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের ভার্টিব্রেট প্যালিয়েন্টোলজিস্ট সুসি মেডমেন্ট। তিনি বলেছেন, ‘ঠিকই অ্যাম্বারের মধ্যে ডাইনোসর যুগের মশার জীবাশ্ম মিলেছে। কিন্তু সেখানে মশার জীবন্ত কলার সন্ধান মেলেনি। ফলে, সেখানে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে, দেখা যায়নি। তাই সেখান থেকে ডাইনোসরদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’

তবে অন্যত্র ডাইনোসরের জীবাশ্মে রক্তনালী ও কোলাজেন প্রোটিন মিলেছে। কিন্তু সেখানেও ডাইনোসরদের আদতে ডিএনএ পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীদের একাংশের বক্তব্য, কোলাজেন তুলনায় বেশি দিন অবিকৃত থাকতে পারলেও। ডিএনএ’র পক্ষে তা সম্ভব নয়। কিছু দিনের মধ্যেই ডিএনএ জল আর সূর্যালোকে একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়।

সুসি বলছেন, ‘এখনও পর্যন্ত কোনো প্রাণীর যে প্রাচীনতম ডিএনএ’র সন্ধান মিলেছে, তার বয়স ১০ লক্ষ বছর। আর ডাইনোসররা অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর আগে। ডাইনোসরদের ফিরিয়ে আনতে গেলে ততটা প্রাচীন ডিএনএ’র হদিশ পেতে আমাদের। তা হলে হয়তো ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বহু বহু কোটি বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ডাইনোসরদের।’

Bootstrap Image Preview