Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

২০১৮ সালে নির্যাতনের শিকার ১৪৪১ নারী ও শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:১৯ PM
আপডেট: ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:১৯ PM

bdmorning Image Preview


‘প্রতিবন্ধী সন্তান হয়েছে বলে আমার মেয়েটাকে মেরে ফেলেছে। মেয়ের মৃত্যুর পর মেডিকেল রিপোর্ট ঠিকমতো পাইনি। পুলিশ প্রথমে আত্মহত্যার অজুহাতে মামলা নিতে চায়নি। পরে মামলা নিলেও জামিনে থাকা আসামিরা এখন হুমকি দিচ্ছে। টাকা নেই বলে আমি আমার মেয়ের হত্যার বিচার পাব না?’—কাঁদতে কাঁদতে নিজের মেয়ের মৃত্যুর বর্ণনা দিলেন ২০১৮ সালে দায়েরকৃত পিংকি আক্তার হত্যা মামলার বাদী নাসিমা বেগম। পিংকি আক্তারের মতো গত বছর নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৪৪১টি।

ডেইলি স্টারের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট আয়োজিত ‘নারীর প্রতি সহিংসতা: সহায়তাপ্রাপ্তির সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে ‘আমরাই পারি জোট’ ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয়টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত নারী নির্যাতনের তথ্য নিয়ে একটি গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর নারী ও শিশু নির্যাতনের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৪১। এর মধ্যে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনাই সবচেয়ে বেশি এবং ৫০ শতাংশ ঘটনাই ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। ২০১৮ সালে প্রকাশিত তথ্যমতে, নারী ও শিশু হত্যার বিচার হয়েছে মাত্র ৪১টি ও ধর্ষণের বিচার হয়েছে মাত্র ১৮টি। সংঘটিত হত্যা ও ধর্ষণের তুলনায় বিচারপ্রাপ্তির হার উদ্বেগজনক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন (যুগ্ম সচিব) বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর সারা দেশে শেল্টার হোমের (আশ্রয় কেন্দ্র) ব্যবস্থা করছে এবং নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু যাতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পায়, সেদিকে দৃষ্টিপাত করছে। বর্তমানে দেশে দুটি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র আছে, নির্মাণাধীন আছে একটি এবং ১৬টি প্রস্তাবিত।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলাগুলোকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পরিচালনার দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে আমরাই পারি জোটের জাতীয় কমিটির সম্মানিত কো-চেয়ারপারসন ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, নির্যাতন রোধে বিচার ব্যবস্থা শক্তিশালী ও নারীবান্ধব করতে হবে। রাজনৈতিক ও আর্থিক প্রভাবের কারণে পুলিশ আলামত নষ্ট করে, চিকিৎসক ভুল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেন, জনপ্রতিনিধিরা অনেক সময় নির্যাতিতদের ভয়ভীতি দেখান। প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু বাল্যবিবাহের শিকার এবং প্রায় ৭০ শতাংশ নারী পারিবারিক নির্যাতনের শিকার, যা উদ্বেগজনক। বর্তমান সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানকে সমর্থনের পাশাপাশি নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স অবস্থান দাবি করেন তিনি।

আলোচনায় ২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বরের সালমা ফারহানা মুক্তির মামলা এবং ২০১৬ সালে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী পূজা রানী দাস ধর্ষণ মামলার বর্তমান চিত্র এবং তাদের বর্তমান অবস্থান তুলে ধরা হয়।

আমরাই পারি জোটের নির্বাহী সমন্বয়কারী জিনাত আরা হক বলেন, হেল্পলাইন নাম্বার ১০৯ থেকে শুধু থানার ওসির ফোন নম্বর দেয়া হয়। কিন্তু ওসিরা পর্যাপ্ত সহায়তা করেন না এবং বিষয়টি মনিটরিংয়ের ব্যবস্থাও নেই।

 

Bootstrap Image Preview