Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যুক্তরাষ্ট্র সরকার সাময়িক সচল বিলে ট্রাম্পের সই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:১০ PM
আপডেট: ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:১০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


সরকার অচলাবস্থার পর্বত সমান চাপের কাছে অবশেষে নতি স্বীকার করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে তহবিল বরাদ্দ ছাড়াই সরকার সচল বিলে সই করেছেন তিনি। শুক্রবার তিনি এই বিলে সই করেন। এর মধ্য দিয়ে ৩৫ দিনব্যাপী মার্কিন ইতিহাসের দীর্ঘতম শাটডাউন ‘আপাত সমাপ্তি’ ঘটল। ফলে শিগগিরই কাজে ফিরতে যাচ্ছেন সরকারের বিভিন্ন বিভাগের আট লাখ কর্মচারী।

তবে সেটা মাত্র তিন সপ্তাহ তথা ২১ দিনের জন্য, ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। অর্থাৎ কর্মচারীদের ২১ দিনের আর্থিক সংস্থান হয় এমন একটি বিলে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে দেয়াল নির্মাণ ইস্যুতে সুরাহা না হলে ফের শাটডাউন শুরু হতে পারে। অনেকের মতে, পাঁচ সপ্তাহব্যাপী প্রশাসনিক অচলাবস্থা স্পষ্টত ট্রাম্পকে রাজনৈতিক কিছুই দেয়নি। এতে শুধু চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন মার্কিন নাগরিক ও দেশটির সরকারি কর্মচারীরা।

এসঅ্যান্ডপি’র বরাত দিয়ে শনিবার রয়টার্স জানিয়েছে, পাঁচ সপ্তাহে মার্কিন অর্থনীতি গুনে গুনে ৬০০ কোটি ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অর্থ ট্রাম্প যে অর্থ দেয়াল নির্মাণের জন্য চেয়েছিলেন, সেই ৫৭০ কোটি ডলারের চেয়েও ৩০ কোটি ডলার বেশি।

বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষেই সর্বসম্মতভাবে অচলাবস্থা তিন সপ্তাহ বন্ধের একটি বিল অনুমোদিত হয়। কিছুক্ষণ পরই ট্রাম্প তাতে স্বাক্ষর করেন। অবৈধ অভিবাসী রুখতে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য চলতি বছর কংগ্রেসের কাছে ৫৭০ কোটি ডলার চেয়েছিলেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের চাহিদাকে অগ্রাহ্য করে বলেছিল, জনগণের করের টাকায় তারা এমন একটি স্থাপনা নির্মাণে রাজি নয়।

এ নিয়ে দুই পক্ষের মতবিরোধেই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বিভাগ ও সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। মাসখানেকের বেশি সময় ধরে বেতনহীন জীবনযাপন করেন আট লাখ সরকারি কর্মী। ট্রাম্প বারবারই দেয়াল নির্মাণের বরাদ্দ ছাড়া কোনো বাজেট বিলে স্বাক্ষর করবেন না বলে জানিয়ে আসছিলেন। কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে জরুরি অবস্থা জারিরও হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত সে পথে হাঁটেননি তিনি। সংকট সমাধানে বৃহস্পতিবার ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান সিনেটররা উচ্চকক্ষে দুটি আলাদা প্রস্তাব দিলে প্রয়োজনীয় ৬০ ভোট না পাওয়ায় সেগুলো প্রত্যাখ্যাত হয়।

পরে দুই দলের আইনপ্রণেতারা বসে নতুন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। বিলটি পাসের পর হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ট্রাম্প জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারি সংস্থা ও বিভাগগুলোর বাজেট পাস হওয়ায় তিনি ‘খুবই আনন্দিত’। টানা পাঁচ সপ্তাহ ধরে যারা বেতনহীন অবস্থায় ছিলেন তাদেরকে ‘অসাধারণ দেশপ্রেমিক’ হিসেবেও অ্যাখ্যা দেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবশ্য বলছেন, তার এ সিদ্ধান্তের মেয়াদ ক্ষণস্থায়ী। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেয়াল নির্মাণের বরাদ্দ নিয়ে সমঝোতা না হলে যুক্তরাষ্ট্র ফের অচলাবস্থার মুখোমুখি হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। অচলাবস্থা মার্কিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কার্যক্রমে প্রভাব ফেলছে, এমনটা শোনার পর ট্রাম্প সংকটের ‘আপাত নিরসনে’ রাজি হয়েছেন বলে এক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এ নতি স্বীকার কয়েক সপ্তাহ আগে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার হওয়া ডেমোক্র্যাট নেতা ন্যান্সি পেলোসির বিজয় হিসেবেই বিবেচিত হবে।

Bootstrap Image Preview