Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘দলীয় মনোনয়নের মাধ্যমে নারীর প্রতিনিধিত্ব পোষা তোতা পাখির মতো’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:১৮ PM
আপডেট: ২৬ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:১৮ PM

bdmorning Image Preview
ছবি: বিডিমর্নিং


‘জাতীয় সংসদে দলীয় মনোনয়নের মাধ্যমে নারীর প্রতিনিধিত্ব পোষা তোতা পাখির মতো। দলের শেখানো বুলির বাইরে বৃহত্তর নারীসমাজের পক্ষে কোনো কথাই তারা বলতে পারেন না। কিন্তু বাংলাদেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজের যথার্থ প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকা অত্যন্ত আবশ্যক যারা দেশের আপামর সাধারণ নারীর সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা বলবেন। একই সাথে জাতীয় উন্নয়নে নারীর অংশগ্রহণের সুযোগ ও মাত্রা বৃদ্ধিতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে ভূমিকা রাখতে পারবেন।'

শনিবার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচন প্রক্রিয়া চালু করা ও আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করার দাবিতে এবং অব্যাহত নারী ও কন্যা নির্যাতনের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বামপ এর সভাপতি আয়শা খানম।

মানববন্ধনে অংশ নেয় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জাতীয় পরিষদ সভায় আগত ৫৩টি জেলার ৪৬০জন প্রতিনিধিসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকবৃন্দ ও সাধারণ সদস্যবৃন্দসহ পাঁচ শতাধিক নারী।

বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি নারীনেত্রী আয়শা খানম, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ।

তিনি আরো বলেন,  বর্তমান সরকারের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৩৩ শতাংশে উন্নীত করা এবং সরাসবি নির্বাচনের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। ২০০৯ সালের ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হবে এবং সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১-তে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার এসব প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করে সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের ব্যবস্থা আরও ২৫ বছর রাখার বিধান করা হয়েছে যা নারীসমাজের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক।

জাতীয় সংসদে নারীর যথার্থ প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা কিভাবে করা যায় তার একটি বাস্তবসম্মত রূপরেখা প্রণয়নের জন্যে দেশের নারীসমাজের পক্ষ থেকে আগামী সংসদ অধিবেশনে একটি বিল উত্থাপনের দাবি জানান তিনি।

পাশাপাশি দেশব্যাপী অব্যাহত নারী ও কন্যা নির্যাতন ও নারীর প্রতি চলমান সহিংসতার বিষয়টিকে সামাজিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করে এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। 

সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর জাতীয় সংসদে কার্যকর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বর্তমান সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তন করতে হবে। মনোনয়ন প্রথা বাতিল করে জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। আসন্ন জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই এ বিষয়ে আলোচনা উত্থাপন করতে হবে।   

উল্লেখ্য, গতকাল ২৫ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আয়শা খানমের সভাপতিত্বে ‘নারী আন্দোলন বিষয়ে তরুণপ্রজন্মের ভাবনা’ বিষয়ে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ-এর রিসার্চ এসোসিয়েট জি এম আরিফুজ্জামান, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রশিক্ষণ গবেষণা ও পাঠাগার উপপরিষদের সদস্য হালিমা তুস সাদিয়া এবং ঢাকা মহানগর শাখার তরুণী সংগঠক শাফকাত আলম আঁখি; ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক নারীআন্দোলন’ বিষয়ে আলোচনা করেন অভিযান-এর নির্বাহী পরিচালক দলিত নারী প্রতিনিধি বনানী বিশ্বাস ও আদিবাসী নারীর প্রতিনিধি হিল উইমেন ফেডারেশনের ফাল্গুনী ত্রিপুরা। এছাড়া সহসভাপতি ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে ‘সংগঠন পরিচালনায় বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ: আন্তঃসমন্বয়, সাংগঠনিক সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ চর্চা, পেশাদারী দক্ষতা’ বিষয়ে আলোচক ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি গৌরী ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দেবাহুতি চক্রবর্তী, দিনাজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ড. মারুফা বেগম। ‘নাগরিক অধিকার ও সুশাসন’ বিষয়ে আলোচনা করেন টিআইবি, বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

Bootstrap Image Preview