Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ৯ বছরে ১০০ দেশ ভ্রমণ করলেন যে নারী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৯:৪৩ PM
আপডেট: ২৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৯:৪৩ PM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশি পাসপোর্ট হাতে কাজী আসমা আজমেরি মাত্র ৯ বছরে ভ্রমণ করেছেন ১০০ টি দেশ।  

বুধবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের উন্নত গবেষণা কেন্দ্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সোসাইটি (ডিইউআরএস) আয়োজিত এক সেমিনারে নিজের ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কথা জানান আসমা। 

তিনি বলেন, ভ্রমণ একটি বিনিয়োগ এবং জ্ঞানের একটি উৎস যার মাধ্যমে আপনি সবকিছু শিখতে পারেন। বই পড়ে কোনো জায়গা সম্পর্কে জানার চেয়ে ভ্রমণ করে আরও বেশি আপনি শিখতে পারবেন।

রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করা আসমা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে ঘুরে ফেলেছেন ১০০ টি দেশ।

সর্বপ্রথম বন্ধুদের কাছে অপমানিত হওয়ার পর আসমা তার ভ্রমণ যাত্রা শুরু করেন। 

আসমা বলেন, আমার বন্ধুরা যারা ২৪-২৫টি দেশ ঘুরেছে তারা আমাকে বলতো একটি মেয়ে একটি ছেলের মতো সব কিছু করতে পারেনা কারণ সে দুর্বল।

এটি আমাকে আঘাত দিয়েছিল কারণ আমি জানি আমি দুর্বল নই। আমি আমার স্নাতক যখন শেষ করি অনেক মেয়েই তা করতে পারে না। আমি ২০০৯ সাল থেকে আমার ভ্রমণ শুরু করি এবং ৯ বছরে আমি ৯৯টি দেশ ঘুরেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশিরা অনেক সময় তাদের পাসপোর্ট পরিবর্তন করেন, কিন্তু তিনি তা করেননি। যদিও তিনি অনেক ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

আসমা আরও বলেন, বাংলাদেশি পাসপোর্ট বদলানো বা অন্য দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করা কোনো গর্বের বিষয় না।অথবা বাংলাদেশিরা বাইরে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয় সেগুলো কমানোর কোনো সমাধানও এটি নয়। পাসপোর্ট পরিবর্তন না করে আমাদের দেশ আমাদেরকে উন্নত করতে হবে।

আমি সবসময় বাংলাদেশি পাসপোর্ট বহন করি যাতে মানুষ আমাকে এবং আমার দেশ জানতে পারে এবং আমি এটা করতে পেরে গর্ব বোধ করি।

নিজের দুর্ভোগের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে আসমা আজমেরি বলেন, শুধু বাংলাদেশি হওয়ার জন্য এবং বাংলাদেশি পাসপোর্ট বহন করার জন্য ভ্রমণের সময় বিভিন্ন জায়গায় অনেক কষ্ট ভোগ করতে হয়েছিল এবং অবহেলার মুখোমুখি হয়েছি। ইউরোপীয় বা অন্যান্য উন্নত দেশের মানুষ আমাদের চেয়ে অর্ধেক টাকা খরচ করে বিশ্বের সর্বত্র বেশি আতিথেয়তা পেয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, সর্বপ্রথম আমি আমার অলঙ্কার বিক্রি করে ভ্রমণের যাত্রা শুরু করি। কারণ অলঙ্কার পরায় আমার কোনো লাভ হবে না। বাঙালি মেয়েরা শাড়ি কেনে, আমি কিনেছি টিকেট। আমি চাই আমার ভ্রমণ হোক দুঃসাহসিক। আর আমার ভ্রমণ থেকে আমি শিখতে পেরেছি যে আমি যথেষ্ট শক্তিশালী। মেয়েরা দুর্বল নামে যে ধারণা প্রচলিত তা ভুল।

অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে আসমা বলেন, আমি কোনো দেশে সবসময় আমার ভ্রমণ শুরু করি সে দেশের জাদুঘর দর্শনের মধ্যদিয়ে। ভালোভাবে ঘোরার জন্য এটি আমাকে সে দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ভারত ছাড়া আর কোথাও অনিরাপদ বোধ করিনি। এ ধরণের পরিস্থিতি আমি বাংলাদেশে মোকাবেলা করেছি এবং আমি জানি কীভাবে তা মোকাবেলা করতে হয়।

বাংলাদেশিরা বাইরের কোথাও অনিরাপদ বোধ করবে না কারণ যে ধরণের সমস্যা হতে পারে সেগুলোর সঙ্গে তারা অভ্যস্ত।

এ সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের উন্নত গবেষণা কেন্দ্রের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান ও সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব জাকির হোসেন।  

Bootstrap Image Preview