মিয়ানমারের রাখাইনে অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ অব্যাহত রেখেছে সেখানকার রাজ্য সরকার। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বিতাড়নের পর রাখাইনে অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ প্রকল্প দ্রুত চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। রাখাইনে মংডুর একটি গ্রাম ও কিয়াপফু শহরে দুইটি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। একই সঙ্গে সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্যও বেশ কিছু গৃহনির্মাণ করা হচ্ছে।
এ পরিকল্পনার আওতায় কানিয়িন চং অর্থনৈতিক অঞ্চল, পোনে নার কিউন শিল্পাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইনে লাইভস্টক ও কৃষি অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে। মিয়ানমার টাইমসের প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত বছর ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া শুরু করে মিয়ানমার। নির্যাতনের মুখে জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এই ঘটনার পর প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠানোর পাশাপাশি মিয়ানমার সরকার নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির কাজ শুরু করে। মংডুর একটি গ্রামে এখন নির্মিত হচ্ছে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন। এতে বিনিয়োগকারীদের জন্য নামমাত্র মূল্য ইজারা ও করমুক্ত সুবিধা রাখা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ভিটে ছাড়া করায় জমি অধিগ্রহণে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে না। আর এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে রাখাইন রাজ্য সরকার।
মিয়ানমার টাইমস জানিয়েছে, রাখাইনের বেশ কিছু এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার সরকার।
রাখাইনের অর্থ, রাজস্ব ও পরিকল্পনাবিষয়ক মন্ত্রী উ কিয়াউ আয়ে থেইন জানিয়েছেন, মার্চ নাগাদ কানিয়িন চং অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা করছে রাজ্য সরকার। কানিয়ন চং এর অবস্থান মংদু এলাকার কাছে। বাংলাদেশ ও ভারতের নিকটবর্তী এ এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হলে সমুদ্র পথে বাণিজ্য বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলটি গড়ে তুলতে ১৬০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার। সরকারি-বেসরকারি দুই খাতের অর্থায়নে এ কাজ চলছে।
রাখাইনের মুখ্যমন্ত্রী উ নি পু বলেন, ‘কানিয়িন চং অর্থনৈতিক অঞ্চলটি সমুদ্র বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় হওয়ার আশা করা হচ্ছে।’
কানিয়িন চং-এর পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইনের পোনে নার কিউন এলাকার পোনে নার কিউন শিল্প অঞ্চলেও অর্থনেতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পূর্ববর্তী সরকার সেখানে শিল্পাঞ্চল নির্মাণের কাজ শুরু করলেও পরে তা বিলম্বিত করা হয়েছিল। এখন নতুন করে সেখানে কাজ শুরু হবে।
উ কিয়াউ আয়ে থেইন বলেন, ‘মিয়ানমারের ন্যাশনাল প্রজেক্ট ব্যাংক অব দ্য মিয়ানমার সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানের আওতায় আমরা পোনে নার কিউন শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলব। অংশগ্রহণের জন্য বিনিয়োগকারীদেরকে আমন্ত্রণ জানাব আমরা।’
এছাড়া কাসাপানাদি নদীর কাছে কিয়াউকেতো এলাকায় কৃষি ও লাইভস্টক অঞ্চল গড়ে তোলারও পরিকল্পনা চলছে।