Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সৌদিতে নির্যাতনের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন পরী বেগম

আজিজুল ইসলাম সজীব, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৫০ AM
আপডেট: ২২ জানুয়ারী ২০১৯, ১১:০৯ AM

bdmorning Image Preview


হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লোকড়া ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা পরী বেগম (২০)। সচ্ছল জীবনের আসায় দালাল কুতুব আলীর মাধ্যমে সৌদি যান তিনি। তার মত এমন অনেক নারী  সৌদিতে পারি জমান। কিছু দিন না যেতেই সেখানে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসতে হয় তাকে।বর্তমানে তিনি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। ঠিকমত কথা বলতে পারছেন না। চলাফেরাও করতে পারছেন না।

পরীর ভাই জানান, ‘গত চৈত্র মাসে দালাল কুতুব আলীর মাধ্যমে সৌদি যায় আমার বইন। আমরা তো  জানতাম না ইভাবে নির্যাতন করা হইব আমার বইনরে। হাসপাতালে গিয়া দেখি আমার বইনের হুশ (জ্ঞান) নাই। যখন হুশ আইলো তখন দেখি কথা কইতে পারে না। শুধু একটু হাত নাড়ছে আমারে দেইক্কা।

এর আগে রবিবার (২০ জানুয়ারি) রাত ১০টায় এয়ার এরাবিয়া (এ৯-৫১৫) বিমান যোগে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে সৌদি থেকে দেশে ফিরেন ৮১ জন নারী। এর মধ্যে ১২জন ছিলেন সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। এদের মধ্যে তিন নারীর অবস্থা এতটাই খারাপ ছিলো যে রাতেই বিমান বন্দর থেকে তাদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি ৩ জনের মধ্যে দুজনই হলেন সিলেটের বিভাগের নারী। তাদের একজন হবিগঞ্জ ও আরেকজন সুনামগঞ্জের বাসিন্দা।

ব্রাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ফিরে আসা নারীদের মধ্যে হবিগঞ্জের ১ জন, ৪ জন সুনামগঞ্জ, ৩ জন সিলেট ও ১ জন মৌলভীবাজার জেলার। এর মধ্যে সিলেট বিভাগের ২ জন নারীকে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও প্রবাসী কল্যাণ ডেক্সের তত্বাবধানে ওসিসি সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকী ১০ জন নারী সেদিনই হযরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন বলে জানান ব্র্যাকের তথ্য কর্মকর্তা আল আমিন নয়ন।

এ ব্যাপারে ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম হেড শরিফুর হাসান জানান, বিদেশে গিয়ে আমার দেশের নারীরা নির্যাতনের শিকার হওয়া কোনো ভাবেই সহ্য করা যায় না। ফেরত আসা নারীদের কন্ঠে নিয়োগকর্তা কর্তৃক নির্মম নির্যাতন ও দূর্বিসহ যন্ত্রনার করুন বর্ণনা শুনলে যে কেউ শিহরিত হবেন। আমার ব্রাকের পক্ষ থেকে যতটুকু পারছি জরুরী সেবা দিচ্ছি। তবে এ ব্যাপারে এককভাবে কাজ করে কোনো ফল আসবে না। কারণ বিদেশ যাওয়ার সময় সবাই পাশে থাকে কিন্তু নির্যাতিত হয়ে ফিরে আসা নারীদের পাশে কেউ থাকেন না। অনেক সময় পরিবারও পাশে থাকে না। এক্ষেত্রে তাদের পূর্ণবাসন করতে সবার সমান ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। 

Bootstrap Image Preview