Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নয়াগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলছে পাঠদান

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:৩০ PM
আপডেট: ২১ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:৩১ PM

bdmorning Image Preview


পাঁচ বছর পূর্বে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দি ইউনিয়নের নয়াগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে ক্লাস রুমে। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য অতিরিক্ত কোন কক্ষ না থাকায় শিক্ষকরাও ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন এই ভবনেই। এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

জানাযায়, নয়াগাও সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের এই ভবনটি স্থাপিত হয় ১৯০৫ সালে। পরে এই বিদ্যালয় ভবটিকে  ১৯৯২/৯৩ সালে সাধারণ শিক্ষা প্রকল্পের আওতায় পূর্ণ নির্মাণ করা হয়। মাত্র ২৭ বছরের মাথায় এই ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। বিগত ৫ বছর পূর্বে প্রকৌশলীগণ জরিপ করে বিদ্যালয় ভবটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করে। অতি পুরাতন ও জরাজীর্ণ এ ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীরা ও অভিবাবকরা।

বিদ্যালয় ভবনটি দেখলে যে কেউই আঁতকে উঠে। ভবনের ছাদ ও দেয়ালের প্লাস্টার উঠে গেছে। ভবনের পিলার ও ছাদের ঢালায়ের সুরকি খসে গিয়ে রড বেড়িয়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যে ছাদ থেকে প্লাস্টার ও সুরকি খসে পড়ে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। ভবনটি হয়ে পড়েছে সেঁতসেঁতে। যেকোন সময় এটি ধ্বসে পড়ে প্রাণহানির ঘটতে পারে।

বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, একটু বৃষ্টি হলেই শ্রেনী কক্ষগুলোর ছাদ চুঁইয়ে চুঁইয়ে রুমের ভেতর পানি পড়ে। অথচ এর মধ্যেই তাদের ক্লাস করতে হয়। অভিভাবকরা জানান, বিষয়টি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও সন্তানকে শিক্ষা দিতে স্কুলে পাঠাচ্ছি।

নয়াগাও সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মহিবুর রহমান জানান, বিদ্যালয়টি বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভয়ে ভয়ে ক্লাস করতে হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ১৮৬জন শিক্ষার্থী রয়েছে। দুই শিফটে ক্লাশ করতে হয়। এখানে প্রাইমারি এডুকেশন ডেভলমেন্ট প্রোগ্রামের (পিইডিপি-২) এর আওতায় একটি ত্রাণ শিবির বা ভবন রয়েছে। বর্তমানে এ ভবনের দ্বিতীয় তলায় অফিস কক্ষ রয়েছে। আর নীচ তলাটি দুর্গতদের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও শিক্ষা অফিস থেকে অনুমোদন নিয়ে এখানে একটি কক্ষ তৈরী করে শিশু শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে। আর জরাজীর্ণ ওই ভনটিতে দুই শিফটে ক্লাশ নেয়া হচ্ছে। দ্রুত এটি বভন মেরামত করা না হলে যে কোন সময় ভবনটি ধসে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জানমালের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

সিরাজদিখান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন জানান, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিস জরিপের পর ভবনটি ঝুকিপূর্ণে ঘোষনা করে। পরে ওই বিদ্যালয়টিসহ ১১৭টি বিদ্যালয় ভবনের করুন চিত্র মন্ত্রণালয়ে সংস্লিষ্ট ওয়েব পেজে আপলোড করা হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস হতে তা বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ চেয়ে অনুরোধ করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হতে ১১৭ বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১৮টি বিদ্যালয় ভবন মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে এর মধ্যে নয়াগাও সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয় নেই। পর্যায়ক্রমে আরো বরাদ্দ যাওয়া যাবে। তখন হয়তো এ বিদ্যালয়টিও বরাদ্দ পাবে। 

Bootstrap Image Preview