Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নাগরিক ঐক্যর প্রতিনিধিসভায় গৃহীত ৪ প্রস্তাব

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:২৭ PM
আপডেট: ১৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:২৭ PM

bdmorning Image Preview
ছবি: সংগৃহীত


নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ শিশু পরিষদ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিনিধিসভায় নিম্নলিখিত আলোচনা ও প্রস্তাব গৃহীত হয়।

১) ২০১৮ শেষ হবার তিন রাত আগে বাংলাদেশে এক ন্যাক্কারজনক নাটকের অভিনয় হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর ছিল জাতীয় সংসদের নির্বাচন। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনটি ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছলচাতুরীর নির্বাচন। এমন একটা পরিবেশ তৈরি করেছিল তারা যে অধিকাংশ বিরোধীদল নির্বাচন বর্জন করে।

আওয়ামী লীগ ও তার জোট ওয়াকওভার পায়। বিনা ভোটে তারা 'নির্বাচিত সরকার' গঠন করে। এরপরের পাঁচ বছরে স্থানীয় সরকারসহ যত নির্বাচনই হয়েছে সব তারা ছলে-বলে জিতে নিয়েছে। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার এই ৫ বছরে লুট হয়ে যায়।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ছিল সেই হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের আন্দোলন। গঠিত হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। দুই দলের বাইরে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যকে ছাপিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রশ্নটি সামনে চলে আসে।

পাঁচ বছরের দুঃশাসন, লুটপাট, নির্যাতন এবং ভোটাধিকার হরণে ক্ষুব্ধ জনগণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হয়। এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একটি ভোট বিপ্লব অনুষ্ঠিত হবে যাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভেসে যাবে।

ভীত ক্ষমতাসীনরাও পরিস্থিতি সামাল দিতে নানা কলাকৌশল প্রয়োগ করতে থাকে। ইতিমধ্যে বহুলাংশে দলীয়করণকৃত প্রশাসনকে ষোলআনা কাজে লাগায় তারা। ২৯ ডিসেম্বর রাতের বেলা বাংলাদেশের ইতিহাসে আর এক কালো অধ্যায় রচিত হয়। ৩০ তারিখের ভোট প্রদানের অর্ধেক কাজ তারা এই কালো রাতে সম্পন্ন করে।

রাতভর ভোট কেটে বাক্সে ভরে তারা। প্রিজাইডিং অফিসাররা অস্বীকার করলে তাদেরকে সহযোগিতা করতে বাধ্য করা হয়। রাতের বেলা ভোট কাটার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে আসা জনগণকে মারপিট করে ছত্রভঙ্গ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে ফাঁকা গুলি চালানো হয় এবং এ কাজে বিজিবি-পুলিশসহ প্রশাসন অংশগ্রহণ করে।

পরদিন অর্থাৎ ভোটের দিন ককটেল ফাটানো, গুণ্ডাগিরি আর ফাঁকা গুলির মাধ্যমে জনগণকে ভোট প্রদানে বাধা দেওয়া হয়। এমনকি বাংলাদেশের বহু ভোটকেন্দ্রে দুপুর থেকে ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয় যেহেতু ভোটারদের দেওয়ার মতো ব্যালট পেপার আর বাকি ছিল না।

মোট কথা নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সমগ্র রাষ্ট্রযন্ত্র ২৯ তারিখ রাতে জনগণের বিরুদ্ধে এক ভোটযুদ্ধে নামে এবং জনগণের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেয়ার মাধ্যমে বিজয় অর্জন করে।

এখন এভাবে ভাবাই সঙ্গত যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংগ্রাম এক নতুন অধ্যায় প্রবেশ করেছে। জনগণের যে বিজয়ের সৌধ গড়ে উঠছিল তাকে নির্মমভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনের নামে এই ডাকাতি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। জনগণ ঘৃণাভরে এই নিষ্ঠুর প্রহসনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই নির্বাচনকে বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবি উঠেছে।

একটি মানবিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে, একটি কল্যাণরাষ্ট্র নির্মাণের লক্ষ্যে আমাদের এই আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

২) নির্বাচনের অব্যহিত পরে সরকারের প্রথম কর্মদিবসে সংঘটিত পোশাক শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে শ্রমিক নিহতের ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং পোশাক শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে এই আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।

৩) নারী শিক্ষা বিষয়ে মাওলানা আহমদ শফীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন পূর্বক অনতিবিলম্বে তার বক্তব্য প্রত্যাহার ও জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করছি।

৪) নতুন সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতির মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারের সামনের দিনগুলোর একটি ব্যর্থ সূচনার প্রয়াস পায়। আমরা অনতিবিলম্বে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবি জানাচ্ছি।

Bootstrap Image Preview