Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

শ্রীমঙ্গলে বাড়ছে শীত, জমজমাট পিঠার ব্যবসা

তোফায়েল পাপ্পু, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৩০ AM
আপডেট: ১০ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৩০ AM

bdmorning Image Preview


শীত আসলেই মনে হয়ে যায় শীতের নানা রকম মুখোরোচক পিঠার কথা। বর্তমানে শীতের জনপ্রিয় পিঠা ভাপা পিঠা। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে হিমেল হাওয়ার প্রভাবে শহরের বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা। শীতের শুরুতে গোধূলী বেলায় হালকা কুয়াশা নেমে আসতে না আসতেই শহরের রাস্তার ধারে সব ধরনের পিঠা বানানোর আয়োজন শুরু করে দেন মৌসুমী পিঠা বিক্রেতারা।

ছোট্ট ভ্যান গাড়িতে থাকে কত ধরনের সরঞ্জাম, চালের আটা, গুড়, নারকেল আর ছোট্ট বাটি। ছোট্ট চুলায় মাটির পাতিলে পানি ভরে মুখ লেপে ছোট করে তার ওপর পাতলা কাপড়ের আস্তরণ দিয়ে বসে পড়ে পিঠার কারিগর। পাতলা কাপড়ে মুড়ে পাতিলের ওপর বসিয়ে আগুনের তাপে পানির বাষ্প উঠে তৈরি হয় ভাপা পিঠা। শহরের বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ শীতকালীন পিঠার দোকান। আবার  শীতের পিঠা বিক্রি করে সংসারের অভাব দূর করছেন অনেকে।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের সোনার বাংলা মার্কেটের পাশে প্রতিদিন পিঠা বিক্রি করেন আলেয়া আক্তার। তিন মেয়ে এক ছেলে অসুস্থ স্বামী নিয়ে চলছে আলেয়া আক্তারের সংসার। সংসারের অভাব দূর করতে পিঠা বিক্রি করেন তিনি। পিঠা বিক্রি করে দৈনিক ২৫০-৩০০ টাকা আয় করেন আলেয়া। বছরের অর্ধেক সময় বাসা বাড়িতে কাজ করলে শীতকালে বিক্রি করেন পিঠা। সেখানে দাড়িয়ে পিঠা খাচ্ছিলেন জীবন কান্তি দেব। 

তিনি বলেন, জীবনের তাগিদে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয় না। তাই পাওয়া যায় না আগের মত পিঠার স্বাদ। তাই রাস্তার পাশে দাড়িয়েই খেতে হয় পিঠা। তবে গ্রামের মত স্বাদটা পাওয়া যায় না। শীতকালে গ্রামে পিঠা তৈরির হিড়িক পড়ে যায়।

শ্রীমঙ্গল শহরের হবিগঞ্জ রোড,স্টেশন রোড, মৌলভীবাজার রোডসহ রাস্তার পাশে এই সব ছোট ছোট পিঠার দোকানগুলোতে তৈরি হচ্ছে পিঠা। ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, তেলের পিঠা (মালপুয়া) ইত্যাদি সাজানো রয়েছে দোকানগুলোতে। 

শহরের কলেজ রোডে পিঠা বিক্রি করেন আব্দুল জলিল। আব্দুল জলিল পিঠা গুলো বানানোর সাথে সাথেই ক্রেতারা গরম গরম পিঠা মজা করে খাচ্ছেন রাস্তার পাশে দাড়িয়েই। সেখানে দাড়িয়ে চিতই পিঠা খাচ্ছিলেন দেলোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, বাসায় প্রতিদিন বাসায় পিঠা তৈরি করা সম্ভব না । তাই পিঠা ব্যবসায়ীরা যেমন মানুষকে তৃপ্তি দিচ্ছে পিঠা খাইয়ে তেমনি নিজেদের কর্মসংস্থান এরও সুযোগ হচ্ছে এই ব্যবসা থেকে।

শহরের চৌমুহনীতে দাড়িয়ে পিঠা খাচ্ছিলেন এক ব্যাংক কর্মকর্তা, তিনি বলেন শহরে এর কোন আমেজ পাওয়া যায় না পিঠার। শহরের সকল পরিবারের মাঝে পিঠার চাহিদা থাকে ঠিকই, কিন্তু এ পিঠা তৈরিতে নানা ঝামেলা সামলাতে হয়। প্রয়োজন পড়ে নানা উপকরণ। সেই সাথে লাগে অভিজ্ঞতা। সব মিলে অন্যসব খাবারের মতো সহজে তৈরি করা যায় না শীতের পিঠা। তবে কোনো ঝামেলা ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই শীতের পিঠা খাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হল ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। 

শীত আসলেই মনে হয়ে যায় শীতের পিঠার কথা। আর এই শীতের পিঠার ভিন্ন স্বাদ সবার জীবনে এনে দেয় নতুন মাত্রা। এই শীতের পিঠা নিয়ে বাংলা সাহিত্যে কত গান-কবিতা রচিত হয়েছে। ব্যস্ত নাগরিক জীবনে ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর সময় মেলা ভার। এজন্য বর্তমানে বাইরের দোকানের পিঠাই একমাত্র ভরসা। আর সে কারণেই বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ শীতকালীন পিঠার দোকান। 

 



 

Bootstrap Image Preview