চলতি বছর সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। এখানে মাঠের পর মাঠ সরিষার আবাদ করা হয়েছে। সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে যেন গোটা উপজেলা সুরভিত হয়ে উঠেছে। ছেলে-মেয়ে সরিষা ফুলের ক্ষেতে বসে ছবিও তুলছে। আর আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তাহলে এ বছর সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
তালা উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ-আল মামুন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪শ' ৬০ হেক্টর। তবে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪শ' ৬৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪শ' ১০ হেক্টর জমিতে, কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪শ' ২০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। এ বছর ভাল ফলনের জন্য টরি-৭, বারি-১৪ ও ১৫ জাতের সরিষা চাষ করেছেন শতকরা ৯০ ভাগ কৃষক। বাকি ১০ ভাগ চাষ হয়েছে দেশী সরিষাসহ অন্যান্য জাতের। সরিষা চাষ করতে প্রধানত ৪টি জিনিস প্রয়োজন হয়। এরমধ্যে রয়েছে ভাল বীজ, সার, সেচ ও যত্ন।
উপজেলার হাজরাকাটী গ্রামের কৃষক কৌহিনুর মোড়ল জানান, জমিতে চাষ দিয়ে বীজ বপনের উপযুক্ত হলে এক বিঘা জমিতে ১৪ কেজি ইউরিয়া সার, ৮.৫ কেজি পটাশ, টিএসপি ১৮ কেজি, জিপসাম ১২.৫ কেজি, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ২ কেজি, জিংক সালফেট ৩.৭৫ কেজি, বরিক এসিড ৭.৭৩ কেজি ও প্রয়োজন মত গোবর সার মিশিয়ে জমিতে ছড়িয়ে দিয়ে সরিষার বীজ বপন করেন। পরে আরেকবার প্রয়োজন মত সার ওষুধ ও সেচ দিয়েছেন। এতে তিনি ভাল ফলনের আশা করছেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সরিষার ফলন প্রতি বিঘায় অর্থাৎ ৩৩ শতাংশ জমিতে সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে। কৃষকরা এ বছর সরিষার বীজ বেশি চাষ করেছেন। এ ছাড়া তিনি উপজেলা বিভিন্ন গ্রামে বা ক্ষেত পরিদর্শন সহ ভাল ফলন পেতে চাষাবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, মৌমাছি সরিষার কোন ক্ষতি করে না। তারা সরিষার ফুলে বসে পরাগায়ন ছড়ায় বিধায় বিঘা প্রতি শতকরা ২৫ থেকে ৩০ ভাগ ফলন বেশি হয়। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার ভাল ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি আশাবাদী।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সাতক্ষীরা জেলায় ৯ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে চাষ করা হয়েছে ৯ হাজর ৪৩০ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার ২৫ হেক্টর জমি বেশি জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। জেলার তালা উপজেলায় সরিষা আবাদ ভাল হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।