Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দিলেন পৌর কাউন্সিলর

নিশাত আনজুমান, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারী ২০১৯, ০৭:৫৩ PM
আপডেট: ০৬ জানুয়ারী ২০১৯, ০৭:৫৩ PM

bdmorning Image Preview


জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে একটি খালে মাটি ফেলে কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। এতে এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথটি বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাউন্সিলর রেলওয়ের জায়গা দখলের জন্য খালটি ভরাট করে ফেলেছেন।

অভিযুক্ত বদিউজ্জামান বদি আক্কেলপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আক্কেলপুর স্টেশন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় রয়েছে বসতবাড়ি, বাজার ও দোকানপাট। এসব এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য রয়েছে একটি ড্রেন। ড্রেনটি দিয়ে পানি পশ্চিম হাস্তাবসস্তপুর মহল্লার স্টেশনসংলগ্ন একটি পুকুরে গিয়ে পড়ে। পুকুর থেকে পানি রেলওয়ের খাল হয়ে মাঠে যাওয়ার একটি মাত্র পথ (স্টেশনসংলগ্ন) আক্কেলপুর-শ্রীরামপুর সড়কের একটি কালভার্ট।

দুই মাস ধরে কাউন্সিলর বদিউজ্জামান বদি ট্রাক করে মাটি এনে খালসহ আশপাশের কিছু অংশ ভরাট করে ফেলেন। এতে কালভার্টটির মুখ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। মাঝখানে পৌর কর্তৃপক্ষ কাজটি বন্ধ করে দিলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় অন্যদিকে মনোযোগের সুযোগে বদি খালটি ভরাট সম্পন্ন করেন। এ অবস্থায় বৃষ্টি হলে কালভার্ট ও খাল হয়ে পানি নিষ্কাশন হওয়ার সুযোগ নেই। এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেবে। ওই সড়কের ওপর দিয়ে পানি পার হবে। এতে সড়কটি নষ্ট হয়ে যাবে। বদি ভরাট করা রেলওয়ের ওই জায়গায় একটি বহুতল ভবন তৈরি করবেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় লোকজন।

নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় চার-পাঁচজন বাসিন্দা জানান, কাউন্সিলর বদি অনেক টাকার মালিক। তিনি টাকা ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সব কাজ করেন। সাধারণ মানুষ তাঁর খাল ভরাট ও কালভার্ট বন্ধের বিষয়ে কোনো প্রতিবাদ করলে তিনি তাদের নানাভাবে হয়রানি ও ক্ষতি করতে পারেন। তাই তারা কিছু বলছে না। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনও জানে। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

স্থানীয়রা আরো জানান, ১৫-২০ বছর ধরে পৌর সদরের মেইন রোড থেকে স্টেশন রোড এলাকার সব পানি ওই কালভার্ট ও খাল হয়ে মাঠে চলে যায়। নির্বাচিত প্রতিনিধি জনগণের সেবক হয়ে জনগণেরই সমস্যার সৃষ্টি করে কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দিলেন। এলাকাবাসী দ্রুত খালটি আগের অবস্থায় এনে কালভার্টটির মুখ খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে।

এ বিষয়ে কাউন্সিলর বদিউজ্জামান বদি জানান, তাঁকে আক্কেলপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর ওই কাজ করার অনুমতি দিয়েছেন। তখন এই প্রতিবেদক বিষয়টি মোবাইল ফোনে মেয়রকে জানান। মেয়র ওই ফোনেই প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন, তিনি কাজটি করতে কোনো অনুমতি দেননি। বরং কাজটি বন্ধের জন্য কাউন্সিলরকে নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর কাউন্সিলরের কাছে জানতে চাওয়া হয় কেন তিনি অসত্য বললেন? এর কোনো উত্তর দেননি তিনি।

আক্কেলপুর স্টেশন মাস্টার খাতিজা খাতুন বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে কোনো বক্তব্য দিতে চাই না।’

মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানার পরে লোক পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম এবং কাউন্সিলর বদিকে কালভার্টের মুখ খুলে দিতে বলেছিলাম। সে আমার কথা শোনেনি। বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

Bootstrap Image Preview