অশ্বগন্ধা আমাদের স্বাস্থের জন্য খুবই উপকারী একটা মহাঔষধী গাছ। অশ্বগন্ধাকে এডাপ্টোজেন বলা হয়, এর অর্থ হল অশ্বগন্ধা আমাদের মানষিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও অশ্বগন্ধা আমাদের মস্তিষ্ক এবং শরীরের জন্য খুবই উপকারি।
অশ্বগন্ধা সংস্কৃত শব্দ, যার অর্থ 'ঘোড়ার গন্ধ'। অশ্বগন্ধার গন্ধ অনেকটা ঘোড়ার মত আর ঘোড়ার মত শক্তিবর্ধক। এটার বৈজ্ঞানিক নাম হল, 'Withania somnifera'। এটা ইন্ডিয়ান জিনসেং বা উইন্টার চেরি নামেও পরিচিত। মানবদেহের অনেক উপকারী বন্ধু এই অশ্বগন্ধা আজ প্রকৃতি থেকে বিলুপ্ত প্রায়।
গ্রামাঞ্চলের আনাচে কানাচে এক সময় আপনা আপনি থেকে বেড়ে উঠতো এই অশ্বগন্ধাসহ মানব দেহের উপকারী নানান রকম ঔষধী গাছ। জীব বৈচিত্রের পরিবর্তনসহ সাধারণ মানুষের গাছ সম্পর্কে কোন জ্ঞান না থাকায় প্রকৃতির আপন খেয়াল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে চিরচেনা চিরপরিচিত মহা মুল্যবান বিভিন্ন ঔষধী গাছ।
তথ্য অনুসন্ধানে দেকা যায়, শহর বা গ্রামাঞ্চলে কিছু কিছু হেকিম কবিরাজরাই তাদের নিজস্ব নার্সারী বা বাড়ির আনাচে কানাচে তাদের ক্রয় বিক্রয় সহজ লভ্যের জন্য নানান রকম ঔষধী গাছ রোপন ও পরিচর্যা করে থাকেন। তাছাড়া অন্য কোথাও সহজে এ সমস্ত ঔষধী গাছ খুঁজে পাওয়া একরকম দূরহ ব্যপার।
শার্শা উপজেলার নাভারণ বাজারের হেকীম কবিরাজ আবু হানিফ বৈদ্দী বিডিমর্নিংকে জানান, বেশকিছু গবেষণাতে দেখা গেছে অশ্বগন্ধা রক্তে সুগার কমাতে সাহায্য করে। অশ্বগন্ধা-ইনসুলিন লেভেল এবং পেশীর কোষে ইনসুলিন এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। কর্টিসোল স্ট্রেস হরমোর নামে পরিচিত, কারণ যখন আমাদের শরির কোন মানষিক চাপে থাকে বা রক্তে সুগারের লেভেল কমে যায় তখন এডরেনাল গ্ল্যান্ড কর্টিসোল রিলিজ করে।
'দুঃচিন্তা আর মানষিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এই অশ্বগন্ধা। এসব কম থাকলে মনযোগ বৃদ্ধি পাবে স্বাভাবিক। ঠিক এ কারণেই মনোযোগ বাড়ানোর জন্য অশ্বগন্ধা ব্যবহার হয়ে থাকে। অশ্বগন্ধা কোলেস্টেরল আর ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।'
'এ ছাড়াও টেস্টোস্টেরন বাড়াতে এবং ছেলেদের ফার্টিলিটি বাড়াতে সাহায্য করে। মাসল বিল্ড করতে টেস্টোস্টেরন খুবই জরুরী একটা হরমোন। তাই যারা মাসল বিল্ড করতে চায় তাদের জন্য অশ্বগন্ধা যথেষ্ট উপকারী বলা চলে। অশ্বগন্ধা মনোবল, সহনশীলতা, শক্তি এবং পেশী বাড়াতে সাহায্য করে। ইমিউন সিস্টেম বুষ্ট করতে সাহায্য করে। ঘুমের সমস্যা সমাধানে অশ্বগন্ধার কোন জুড়ি নেই। এই রকমভাবে অশ্বগন্ধা মানব দেহের জন্য এক প্রকার মহা ঔষধই বলা চলে।'
তিনি আরো জানান, প্রকৃতিতে জন্মানো প্রত্যেক উদ্ভিদের রয়েছে হরেক রকমের গুনাগুন। তাই এইসব উদ্ভিদ গাছকে চিনতে হবে, জানতে হবে এর গুনাগুন এবং নিজে সচেতন হতে হবে পাশাপাশি অন্যকে সচেতন করে এই মহামুল্যবান সব ঔষধী গাছ বাঁচিয়ে রাখতে হবে।