Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বই বিতরণ পরিণত হয়েছে টাকা আদায়ের হাতিয়ারে

পটুয়াখালীতে সেশন ফি পরিশোধ ছাড়া মিলছে না বই

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:৩৮ PM
আপডেট: ০৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:৩৮ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ

সেশন ফি পরিশোধ ছাড়া মিলছে না বই। আর সেশন ফি'র নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে টাকা। ফলে মাধ্যমিক পর্যায় সরকারের বিনামূল্যে বই বিতরণ উৎসব পরিণত হয়েছে ভর্তি ফিসহ বিভিন্ন খাতের টাকা আদায়ের হাতিয়ারে।

অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে সংশ্লিষ্ট ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশে প্রকাশ্যে চলছে এমন সেশন বাণিজ্য। আর এদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন সাধারণ অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা। আর এসব কারণে অন্তত এক তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত পায়নি বই। পটুয়াখালীর অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই চিত্র বিদ্যমান।

স্থানীয়রা বলছেন, এতে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষায় সাধারণ মানুষের উৎসাহ যোগাতে সরকারের মহতি উদ্যোগ।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অনিয়ম আর দুর্নীতির নানা তথ্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্টক দেখলেই বোঝা যায় কেন এখনও এক তৃতীয়াংশ বই বিতরণ করা হয়নি। একেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একেক ধরনের সেশন ফি আদায় করা হচ্ছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত সেশন ফিসহ ভর্তি বাবদ নেয়া হচ্ছে।

পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার উপজেলার ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ২৭টি মাদ্রাসার সবক'টিতে একই চিত্র বিদ্যমান।

খেপুপাড়ার মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খেপুপাড়া নেছারউদ্দিন ফাজিল মাদ্রাসা, মহিপুর কো-অপ. মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত: ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খবর নিয়ে শিক্ষার্থীর এমন সব দুরাবস্থার চিত্র পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠনগুলোর এমন বাধ্যবধকতায় অবিভাকরা ধার-দেনা-কর্জ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাবি করা অর্থ দিয়ে বই নিতে বাধ্য হচ্ছে।

১১৬০ সেট বই পেয়েছে মহিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। কিন্তু এখনও বিতরণ বাকি অন্তত ৩৫০ সেট বই। একই অবস্থা খেপুপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। এখনও এক তৃতীয়াংশের বেশি (প্রায় পাঁচশ’ সেট) বই বিতরণ করা হয়নি। এমন দৃশ্য অধিকাংশ স্কুল মাদ্রাসার।

মহিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছালাম জানান, নতুন ভর্তিসহ সেশনফি বাবদ ৫০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। তবে টাকার জন্য কোন শিক্ষার্থীর বই বিতরণ বন্ধ রাখা হয়নি।

খেপুপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম জানান, টাকার জন্য কারও বই আটকানো হয় না।

সেশনফি ৭০০ টাকার সঙ্গে অন্য চার্জ নেয়া হচ্ছে জানালেও কয়েকজন অবিভাবক বলেন, হাজার থেকে ১২শ' টাকা নেয়ার কথা।  তবে রোষানলের ভয়ে এসব অবিভাবক ও  শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি।

তারা আক্ষেপ করে বলেন, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে সরকারি দলের একশ্রেণির নেতা-কর্মী সভাপতি ও সদস্য হিসাবে নিয়োজিত রয়েছেন। অথচ সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় কমিটির সদস্যদের কোন ভূমিকা নেই।

কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। অনিয়ম করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Bootstrap Image Preview