Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

৪৭ বছরের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সংঘাতহীন হয়েছে: আ.লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৩:৪২ PM
আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৩:৪৪ PM

bdmorning Image Preview
ছবি: বিডির্মিং


আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, আমি বলতে পারি যে বাংলাদেশের গত ৪৭ বছরের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সংঘাতহীন হয়েছে।

রবিবার (৩০ ডিসেম্বর) ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

নানক বলেন, যদিও কিছু কিছু জায়গায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, এই ঘটনা অত্যন্ত নগণ্য। তৃতীয় বিশ্বের যে কোন দেশে এ ধরনের সাধারণ নির্বাচনে এর চেয়ে অনেক বেশি সংঘাত হয়। হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে। তাই আমরা মনে করি এবারের নির্বাচন যে কোনো সময়ের চেয়ে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যে ১০ জনের প্রাণ গেছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। আমরা এটা অনেক আগে থেকে আশঙ্কা করেছিলাম যে বিএনপি জামায়াত তাদের শেষ রক্ষার জন্য যে কোন ধরনের অপতৎপরতা চালাতে পারে। আমরা এজন্য দেশবাসীকে বারবার সতর্ক করেছি। দেশবাসী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে তারা বড় ধরনের কোনো নাশকতা চালাতে পারেনি।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ভোটের উৎসব ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত ধৈর্যসহকারে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে উল্লেখ করে নানক বলেন, সকাল আটটা থেকে সারা দেশের অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। ইতোমধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে প্রায় ৬ ঘণ্টা ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা সর্বত্রই ভোটারদের সরব উপস্থিতি দেখতে পাচ্ছি। আমরা আশা করি ভোটগ্রহণের শেষ সময় পর্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে মানুষ ভোটাধিকার প্রদান করবে। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অতীতের যে কোনো নির্বাচনে থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সহিংসতা কম হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ভোটের উৎসব ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত ধৈর্যসহকারে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

বিএনপি জামায়াতের নিশ্চিত পরাজয় জেনে ভোটের আগের রাত থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এমন দাবি করে নানক বলেন,  সারাদেশে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে এবং প্রতি মুহূর্তেই সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা আক্রমনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সহিংসতা যা ঘটছে তার মধ্যে শুধুমাত্র এখন পর্যন্ত ১০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী নিহত হয়েছে, ৫৫ জন আহত হয়েছে, ছয়টি জায়গায় বোমা হামলা চালানো হয়েছে ,১০ টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, সাতজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আহত হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে। নোয়াখালী -২ আসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে, চাঁদপুরের ম্যাজিস্ট্রেট হাসানের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আজ পর্যন্ত ঢাকা -১আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সালমা ইসলাম যাকে বিএনপি সমর্থণ দিয়েছে, তার পক্ষে ভোট কেনার সময় ২৩ জন আটক হয়েছে। নেত্রকোনা ৪ আসনে ভোট কেনার সময় জেলা বিএনপির সদস্য ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আটক হয়েছে। এভাবে সারা দেশে তারা সহিংসতা ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার অপচেষ্টা চালিয়ে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের পথ অবরুদ্ধ করেছে।

পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বর্জনের নাটক শুরু করেছে দাবি করে নানক বলেন,  তাদের অনেকেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই ভয় থেকেই তারা ভোট বর্জনের খেলা শুরু করেছে। বিএনপি-জামায়াতের নীতি হলো নির্বাচনে জিতলে আছি হারলে নাই। এখন পর্যন্ত বিদেশী পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে। সার্কভিত্তিক পর্যবেক্ষক এবং নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পুরনো কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। বাংলাদেশে ভোট ডাকাতির ইতিহাস সৃষ্টিকারী বিএনপি নির্বাচনে পরাজয়ের সম্ভাবনা দেখলেই ভোট কারচুপির অভিযোগ করে। এখন ড. কামাল হোসেন নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে  নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের নামে জনগণের রায় ডাকাতি করা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমরা সতর্ক করে বলে দিতে চাই, জনগণের ভোট ডাকাতির অধিকার কারো নেই। জনগণের রায়কে নিয়ে কাউকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, দলটির আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহম সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক,  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর,  বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন,  উপ- দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম রব্বানী চিনু এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

Bootstrap Image Preview