একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে ঐক্যফ্রন্ট সরে যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। পাশাপাশ ঐক্যফ্রন্টের মধে কোন রকম দ্বন্দ্ব নাই। আর বিভেদের কোন প্রশ্নই উঠে না। বরং জোটটি আরো সুসংগঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ড. কামলা।
শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন থেকে সরে যাবে- আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কামাল হোসেন বলেন, আমরা তো নির্বাচন থেকে কোনভাবেই সরে যাবো না।
পুলিশের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সারাজীবন কোন নিরাপত্তা চাই নাই। চাইলে জানাবো। তবে এখন পর্যন্ত আমি নিরাপত্তা চাই নাই।
জানতে চাওয়া হয়, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ফলাফল কেমন প্রত্যাশা করছেন। জবাবে ড. কামাল বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে, জনগণ আমাদের পক্ষে ভোট দেবে। কারণ মানুষ পরিবর্তন চায়। এটাই প্রমাণ করে যে, আমরা জিতবো। যদি দুই নম্বরি না হয়।
আপনি কি আপনার ভোটটা দিতে পারবেন, নাকি সংশয় আছে- জানতে চাইলে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক বলেন, ইনশাল্লাহ। এটা অধিকারের ব্যাপার। সংশয়ের ব্যাপার না। আমি অবশ্যই আমার অধিকার প্রয়োগ করতে বের হবো, সকাল ৮ টা থেকে ৯ টার মধ্যে। আমার পাশেই কেন্দ্রে আছে, সেখানেই পায়ে হেঁটে যাবো।
বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে দ্বন্ধ চলছে- এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, কোন রকম দ্বন্দ্ব নাই। আর বিভেদের কোন প্রশ্নই উঠে না। বরং আরো সুসংগঠিত হয়েছে।
বিএনপির দুই নেতার ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের দু'জন নেতা আলোচনা করেছেন। তাদের আওয়াজটা যদি আপনারা লক্ষ্য করেন তাহলে বুঝবেন- সেই আওয়াজটা ছিল ক্ষোভের আওয়াজ। আমরা পোস্টার লাগাতে পারবো না, প্রচারণা করতে পারবো না-এরকম পরিস্থিতিতে প্রার্থির মধ্যে ক্ষোভ আসতেই পারে। আর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ রাষ্ট্রপতি ছিলেন, পরে প্রধানমন্ত্রী। সেই মানুষটা যখন দেখে যে, তাকে বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। এই রকম পরিস্থিতিতে কেউ ক্ষোভে ও দু:খে কিছু কথা বলতেই পারে। তবে নির্বাচন থেকে তো কেউ সরে যায়নি।
নির্বাচনী প্রচারণা করতে না পারাসহ নানান অভিযোগ করেছেন, এরপরে যদি কাল সুষ্ঠু নির্বাচন না হয় তাহলে আপনারা ভোট বর্জন করবেন কী না- এ প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, যদির ওপরে কোন মতামত দেওয়া ঠিক না। আমরা আশ্বস্ত হতে চাই, সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে। তবে পরিষ্কার বলে দিতে চাই, আমরা বিশ্বাস ও আশা করি না যে, নির্বাচনে পোলিং এজেন্টদেরকে বের করে দেওয়া হবে। আর যদি এটা হয় তখন ঐক্যফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নেবে কী করা যায়।
এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা-৬ আসনের ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ঢাকা-৬ নির্বাচনী এলাকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। আমার নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা হয়েছে। ঢাকা-৬ আসনে ৫০০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
অপর প্রশ্নের জবাবে ঢাকা-৭ আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থি মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, সারা বাংলাদেশের চিত্র এক। আমরা পোস্টার লাগাতে পারি নাই, লিফলেট দিতে পারি নাই এবং আমরা মাঠে নামতে পারিনি। এছাড়া তফসিল ঘোষণার পরে আমার নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রায় ১৫০ নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৭০০ কর্মীর নামে ৪টা থানায় মামলা করা হয়েছে। এরপরও আমরা এজেন্ট দেবো এবং তারা সাহসীকতার সাথে ভোট কেন্দ্র থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।