Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নির্বাচনে সহিংসতা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের কোনো স্থান নেই: ১৬টি সংগঠন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:২৮ PM
আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:৩৭ PM

bdmorning Image Preview


গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনী সহিংসতা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের কোনো স্থান নেই বলে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন (এএইচআরসি) ও এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (অ্যানফ্রেল)সহ ১৬টি আন্তর্জাতিক ও বিদেশি সংগঠন।

শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘নিয়ন্ত্রণমূলক’ নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করা এসব সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণার পর থেকেই সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ন্যূনতম দৃশ্যমান উপস্থিতিকে মাড়িয়ে নাগরিক সমাজ, বিরোধী পক্ষ এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর দমনপীড়ন শুরু করে।

এতে বলা হয়, প্রকৃত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনী সহিংসতা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের কোনো স্থান নেই। সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে বিরোধী জোটের ৩০টি গাড়িবহরে হামলা এবং ১৫৯টি আসনে ২০৭টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৪৩ জন প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে ১৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে বিরোধী জোটের ১৭ প্রার্থীকে। সুপ্রিম কোর্ট ২৩টি আসনে বিএনপি প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা করেছে।

এছাড়া সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বিরোধী দলের সদস্যদের মারধর, বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া, নারী প্রার্থীদের মারধর এবং বিরোধী দলের প্রচারণায় সহিংস হামলার ঘটনা ওঠে এসেছে। ভোটারদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়াই এসব হামলার উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের সম্ভাবনাকে ধূলিসাৎ করা হয়েছে বলে মনে করে সংগঠনগুলো।

বিরোধী দলগুলোর দাবি অনুযায়ী, নভেম্বরে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে ২১ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০১৮ সালের শুরু থেকে বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে ক্রমবর্ধমান ‘গায়েবি’ মামলা দায়েরের বিষয়টি কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। এসব মামলার মধ্যে বিরোধী জোটের অন্যতম নেতা ব্যারিস্টার মইনুলের হোসেনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা এবং ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, চাঁদাবাজি এবং মাছ চুরির মামলাও রয়েছে।

বিবৃতিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তার, মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’র ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের ওপর নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধের বিষয়টিও উঠে আসে।

এতে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে সহিংস পরিবেশ তৈরি, আইন ও বিচার বিভাগকে বিরোধী দলের বিপক্ষে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার, নাগরিক সমাজের সঙ্গে শত্রুতাপূর্ণ আচরণ এবং সংবাদমাধ্যমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গণমানুষের মুক্তমতকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশকে একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের মধ্যে ফেলে যে পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, সেটা গণতান্ত্রিক নির্বাচনী নীতিমালার সঙ্গে যায় না।

সংগঠনগুলো বলছে, বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য হবে কিনা সেটা নিয়ে আমরা সংশয় প্রকাশ করছি। কোনো যুক্তিতেই এই নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু বলে বিবেচিত হতে পারে না।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী ১৬টি সংগঠনের মধ্যে রয়েছে- এশিয়ান হিউম্যান রাইট কমিশন (এএইচআরসি), এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (আনফ্রেল), গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ফর ডমেস্টিক ইলেকশন মনিটরস (জিএনডিইএম) এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ)।

Bootstrap Image Preview