প্রত্যেক মানুষের মতো নারীদেরও সামর্থ্য আছে। আর নারীদের এই সামর্থ্যের যথাযথ প্রয়োগও করতে হবে। ইসাবেল পেরন এমনটাই বিশ্বাস করতেন। বিশ্বের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ইসাবেল পেরন।
১৯৭৪ সালের পূর্বে সারা বিশ্বে কোনো দেশের প্রেসিডেন্ট পদে একজন নারীও অধিষ্ঠিত ছিলেন না। ১৯৭৪ সালের ১ জুলাই ইসাবেল পেরন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের পদ অলঙ্কৃত করেন।
তিনি কেবল আর্জেন্টিনার প্রথম নারী প্রেসিডেন্টই নন, সাথে সাথে তিনি বিশ্বের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হবারও গৌরব অর্জন করেন। তিনি যখন এ পদে অধিষ্ঠিত হন তখন তার বয়স ৪৩ বছর।
ইসাবেল পেরনের স্বামী ছিলেন হুয়ান পেরন। তিনি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। ইসাবেল পেরন ছিলেন তার স্বামীর তৃতীয় স্ত্রী। ইসাবেল প্রথমে তার স্বামীর ক্ষমতাকালে ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। এসময়ই হুয়ান পেরন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কর্মরত অবস্থায় তার অফিসে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি স্বামীর স্থলাভিষিক্ত হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ১৯৭৬ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত প্রায় দু’বছর দায়িত্ব পালন করেন। মূলত ইসাবেল পেরনের প্রেসিডেন্ট হবার মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নের চিত্রের বড় ধরনের পালাবদল শুরু হয়েছে। ইসাবেল পেরন নারীদের অধিকার নিয়ে সরব ভূমিকা পালন করেন।
তিনি বলতেন, ‘আমি নারীদের অধিকতর নারীদের অধিকার দাবি করি, কারণ আমি জানি নারীদের সাথে কী করা হয়েছিলো। প্রত্যেক মানুষের মতো নারীদেরও সামর্থ্য আছে, আর নারীদের এই সামর্থ্যের যথাযথ প্রয়োগও করতে হবে।’
ইসাবেল পেরন তার জনগণের উপর আস্থাশীল ছিলেন। তিনি মনে করতেন আর্জেন্টাইনদের রাষ্ট্রসেবা প্রদানের মধ্য দিয়েই তিনি বেঁচে আছেন ও থাকবেন। ইসাবেল পেরনের জন্ম ১৯৩১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। তার পুরো নাম মারিয়া এসটেলা মারতিনেজ কারতাস ডি পেরন। কিন্তু আর্জেন্টিনাসহ সারা বিশ্বে তিনি ‘ইসাবেল পেরন’ নামেই পরিচিত।
বর্তমানে ব্রাজিল, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, চিলি, ক্রোয়েশিয়া, কসোভো, লাইবেরিয়া, লিথুয়ানিয়া, মাল্টা, মরিশাস, স্যান মারিনো, সাউথ কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড ও নেপালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নারীরা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ইসাবেল পেরন তাদের পূর্বসূরী হিসেবে শ্রদ্ধেয়।