Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গোপালগঞ্জে সর্বত্র 'নৌকার' জয়ধ্বনি

হেমন্ত বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:১৭ PM
আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:১৯ PM

bdmorning Image Preview


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচণের শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় গোপালগঞ্জের সর্বত্র এখন চলছে 'নৌকার' জয়ধ্বনি। গোপালগঞ্জের তিনটি আসনের কোন আসনেই উল্লেখযোগ্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মী বা সাধারণ ভোটার কেউ ঘরে বসে নেই। ছোট বড় নারী পুরুষ সবাই অত্যন্ত উৎসবমূখর পরিবেশে তারা মাঠে নেমেছেন।   

খোল-করতাল, বাদ্য-বাজনা নিয়ে নেচে গেয়ে নৌকা’র প্রচারণায় তারা মেতেছেন। নৌকা’র ব্যানার আর পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে চারিদিক। প্রতিটি ইউনিয়নেই নৌকা’র সমর্থক ও ভোটারদের মাঝে বিরাজ করছে প্রতিযোগিতামূলক প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচণী প্রচারণা যেন পরিণত হয়েছে উৎসবে। ‘জয় বাংলা - জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘জয় বাংলা - জিতবে আবার নৌকা’, ‘শেখ হাসিনার সরকার - বার বার দরকার’ স্লোগানসহ নৌকার জয়গানে এখন মুখরিত গোপালগঞ্জের প্রতিটি পাড়া মহল্লা।

কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত গোপালগঞ্জ-৩ আসনে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ আসনে বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনসহ আরও ৪ জন প্রার্থী থাকলেও উল্লেখযোগ্য নন কেউই।

গত ১২ ডিসেম্বর বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠের জনসভায় ‘নৌকা’ মার্কায় ভোট চেয়ে তাঁর নির্বাচণী প্রচারণা শুরু করেন। এরপর দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটাররা একযোগে নেমে পড়েন নৌকা’র জয়ধ্বনি নিয়ে। সেই থেকে উৎসবমূখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে গভীর রাত অবধি চলছে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচণী প্রচারণা। প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত থাকার কারণে তাঁর প্রচারণার সব কাজই করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও ভোটাররা।

সেই সঙ্গে জনসভা-পথসভায় যোগ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এলাকার সর্বস্তরের মানুষ তাদের প্রিয় নেত্রীকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট দিয়ে ৭ম বারের মতো বিজয়ী করতে তারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

ইতিমধ্যে এ আসনে কিছু বিএনপি নেতাকর্মীও যোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগে। তারা জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নসহ শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। আওয়ামী লীগের এ দুর্ভেদ্য ঘাঁটি থেকে তিনি আবারও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন এবং টানা তিনবার সরকার গঠন করবেন বলে প্রত্যাশা সবার।

এদিকে গোপালগঞ্জ সদর ও কাশিয়ানী উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত গোপালগঞ্জ-২ (সংসদীয় আসন ২১৬) আসনে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং এ আসনের ৭ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। গোপালগঞ্জের মানুষ তাকে আধুনিক গোপালগঞ্জের রূপকার বলে আখ্যা দিয়েছেন।

এ আসনে বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের আরও ২ জন প্রার্থী রয়েছেন; কিন্তু কেউই উল্লেখযোগ্য নন। ইতিমধ্যে তিনি এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নে জনসভা পথসভা করেছেন। সঙ্গে ছিলেন তার দু’ কৃতি-সন্তান, এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সার্বক্ষণিক রয়েছেন প্রচারণার মাঠে। অত্যন্ত স্বত:স্ফূর্তভাবে সবাই যে যেভাবে পারছেন নির্বাচণী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রতিটি ইউনিয়ন থেকেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ ভোটাররা তাকে ৯৫% ভোট দিবেন বলে অঙ্গিকার করেছেন এবং উৎসবমূখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। 

শেখ সেলিম বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সোনার বাংলা’র স্বপ্ন দেখেছিলেন, আজ তারই সুযোগ্য কন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে আমাদের সেই স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে। শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচণে আওয়ামী লীগের কোন বিকল্প নেই, নৌকা’র কোন বিকল্প নেই। 

এছাড়া মুকসুদপুর ও কাশিয়ানীর বাকী অংশ নিয়ে গঠিত গোপালগঞ্জ-৩ (সংসদীয় আসন ২১৫) আসনে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও এ আসন থেকে তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য লে. কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান। বিগত নির্বাচনগুলোতে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে অঙ্গিকার করেছেন এলাকার নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ ভোটাররা। অত্যন্ত উৎসবমূখর পরিবেশে তারা নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ আসনেও বিএনপি ও এলডিপিসহ আরও ৪ জন প্রার্থী রয়েছেন; কিন্তু তাদের তেমন কোন প্রচার-প্রচারণা লক্ষ্য করা যায়নি।

এবারের নির্বাচণে গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যদের কোন প্রচার-প্রচারণা লক্ষ্য করা না গেলেও জেলার সবখানে মুজিব পাগল মানুষগুলো এবারের নির্বাচনী প্রচারণাকে উৎসব হিসেবেই গ্রহণ করেছেন। বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে উৎসবমূখর পরিবেশে তারা নির্বাচণী প্রচারণার শেষপ্রান্তে এসে পৌঁছেছেন। গোপালগঞ্জের তিনটি আসনেই বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকা বিজয়ী হবে এবং পূর্বের যে কোন বারের তুলনায় এবারে আরও বেশি ভোটে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচিত হবেন বলেই সবা বিশ্বাস।  

Bootstrap Image Preview