Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রাজধানী ছেড়ে নিজ এলাকায় ফিরছেন ভোটাররা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক-
প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০২:১১ PM
আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০২:১১ PM

bdmorning Image Preview


ভোট নিয়ে যে পরিস্থিতিই তৈরি হোক না কেন, রাজধানীতে বসবাসরত সারাদেশের ভোটাররা ইতিমধ্যে ঘরমুখো হয়েছেন। এলাকায় ভোটার হওয়ার কারণে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে অনেকেই আগেভাগে বাড়ি ফিরেছেন। কর্মব্যস্ত শহর তাই ভোটের জন্য দিন দিন ফাঁকা হচ্ছে।

মঙ্গলবারে বড়দিনের ছুটি সামনে রেখে সোমবারই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। এর ধারাবাহিকতায় গত তিন দিন রাজধানীর লঞ্চ, বাস ও ট্রেন স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ছেই। মানুষের এভাবে ঢাকা ত্যাগের কারণে ইতিমধ্যে অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে রাজধানী। রাস্তাঘাট, অভ্যন্তরীণ যানবাহন, বাজারে-শপিংমলে স্বাভাবিক ভিড় আর নেই।

সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন সম্পাদক ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, শুধু ঢাকা নয়, অন্য শহর থেকেও মানুষ এলাকামুখী। মানুষ এখন গ্রামমুখী দুটি কারণে। একটি ভোট, অন্যটি ছুটি। মানুষের এই এলাকামুখিতা প্রমাণ করছে, তারা ভোট দিতে চায়। ভোট দেয়ার আগ্রহ আছে। এখন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়িত্ব মানুষের এই আগ্রহ ও ইচ্ছা পূরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। তিনি মনে করেন, তবে মানুষের মধ্যে শঙ্কাও আছে। এ কারণেও অনেকে এলাকায় যাচ্ছে।

এবারের ভোটের দিন পড়েছে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে। ফলে ভোটের আগের দু’দিনের সাপ্তাহিক ছুটিসহ একটানা তিনটি দিন ছুটি মিলেছে। পরপর তিনদিনের ছুটি ঘরপিপাসু মানুষের জন্য পরিণত হয়েছে ঈদের ছুটিতে। এরসঙ্গে কেউ আগের দু’দিন বুধ ও বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়েছেন। এ ধরনের ব্যক্তিরা বড়দিনের ছুটিসহ ছয়দিন এলাকায় থাকার সুযোগ পাচ্ছেন।

জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড আরবানাইজেশন প্রসপেক্টের তথ্য অনুযায়ী ঢাকা শহরের জনসংখ্যা বর্তমানে এক কোটি ৭০ লাখ। অপরদিকে ঢাকা মহানগরসহ ঢাকা জেলায় এবার মোট ভোটার ৭৭ লাখ ৩০ হাজার। মহানগরীর বাইরে আরও ৫টি আসন আছে। সেই হিসাবে ঢাকা মহানগরের ১৫ আসনে যদি ৬০ লাখ ভোটারও থাকে, তাহলে রাজধানীর বাকি ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ ভোটার নন। তাদের মধ্যে শিশু বাদ দেয়া হলেও প্রচুর সংখ্যক মানুষ নিজ নিজ এলাকার ভোটার। তাই ঘরমুখো মানুষের সংখ্যা বিশাল।

ওদিকে ভোটের কারণে ছুটি পেয়ে মানুষ রাজধানী ছাড়ার কারণে রাস্তাঘাটও অনেকটা ফাঁকা। রাজপথে কমেছে গাড়ির চাপ। জাতীয় প্রেস ক্লাব ও শাহবাগ মোড়ে দায়িত্বরত দুই ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, মঙ্গলবারের পর সড়কে গাড়ির চাপ কমেছে। রাস্তায় লোকজনও কম। মনে হচ্ছে, ঢাকায় মানুষের সংখ্যা কমেছে।

এর কারণ উল্লেখ করে নাজমুল হাসান নামে গুলশানের এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ২৮ ডিসেম্বর (শুক্রবার) দিবাগত রাত ১২টা থেকে ১ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আবার ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২টা থেকে ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত সড়ক-নৌ পথে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্বাচন সামনে রেখে ঘরেফেরা মানুষের স্রোত মিলছে রাজধানীর সায়েদাবাদ, গাবতলী, মহাখালী বাস টার্মিনালে। আরও যাচ্ছে সদরঘাট ও কমলাপুর রেলস্টেশনে। হানিফ পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বাড়ি ফিরতি মানুষের ভিড় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিই মনে হচ্ছে। তাই এই ভিড়। মঙ্গলবার সরেজমিনে সদরঘাটে গিয়েও ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

গত দু’দিন এভাবে রাজধানীতে সারাদেশ থেকে গমনাগমনের স্টেশনগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে। সমান্তরালে ছেড়ে যাওয়া যানবাহনগুলোতেও ভিড় বেশি। শ্যামলী থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্দেশে যাত্রা করা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, পাঁচ বছর পর একবার ভোট দেয়ার সুযোগ পাই। অস্থিরতার কারণে গত বছর ভোট দিতে পারিনি।

Bootstrap Image Preview