Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আরডিসির জরিপ: ২৪৮ আসনে মহাজোট, ৪৯ আসনে জয় পেতে পারে ঐক্যফ্রন্ট

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৫৫ AM
আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৫৫ AM

bdmorning Image Preview


আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৪৮টি আসন নিয়ে আবারও সরকার পরিচালনায় আসছে বলে আভাস মিলেছে এক জরিপে।  জরিপ সংস্থাটি ৯ থেকে ১৬ ডিসেম্বর দেশের ৫১টি সংসদীয় আসনের ২ হাজার ২৪৯ ভোটারের ওপর জরিপ চালিয়ে এ আভাস দিয়েছে।

গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র-আরডিসির ওই জরিপের ফলে ড. কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৪৯ ও অন্যরা তিনটি আসন পাবে বলে জানানো হয়েছে। জরিপের ফল বলছে এবারের বিরোধী দল হচ্ছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোট। 

বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ওই জরিপের ফল প্রকাশ করে আরডিসি।

আরডিসির হয়ে জরিপ পরিচালনায় যুক্ত মার্কিন পরামর্শক ফরেস্ট ই কুকসন বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন। তার বিজনেস কার্ডে বলা হয়েছে, তিনি ডেভেলপমেন্ট ইন ডেমোক্রেসি নামে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থার অর্থনীতিবিদ।

বাংলাদেশে বিভিন্ন গবেষণা ও জরিপ সংস্থার পাশাপাশি পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) বিভিন্ন জরিপেও পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন বলে অনুষ্ঠানে জানান তিনি।

রিসার্চ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরডিসি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ছায়া ভোটের ফলে দেখা গেছে, দেশের ভোটারদের ৬০ শতাংশ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। আর বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টকে ভোট দিয়েছে ২২ শতাংশ ভোটার। এই ভোটে ১০ শতাংশ মানুষ কাকে ভোট দেবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেননি। আরডিসির জরিপের মাধ্যমে সংগৃহীত এই ছায়া ভোটের ফল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। ছায়া ভোটে জাতীয় পার্টির পক্ষে ভোট পড়েছে ৪ শতাংশ। আর ৩ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে জরিপে অংশ নেয়া ৯৮ শতাংশ ভোটার বলেছেন, তারা একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোট দিতে চান।

জরিপের সময় ভোট দেয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে মতামত দিয়েছেন ভোটাররা। আওয়ামী লীগকে ভালো বলেছে ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ এবং খারাপ বলেছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। বিএনপিকে ভালো বলেছে ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ এবং খারাপ বলেছে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ। জাতীয় পার্টিকে ভালো বলেছে ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ এবং খারাপ বলেছে ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ।

জাতীয় নির্বাচনের ভোটারদের সংখ্যার তুলনায় এই জরিপের নমুনার সংখ্যা কম বলে মনে করেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ফরেস্ট ই কুকসন বলেন, জরিপটির নমুনা ছোট। তবে যুক্তরাষ্ট্রেও এমন ধরনের জরিপ নেয়া হয় যেখানে নমুনার সংখ্যা থাকে কেবল এক হাজার। ছোট নমুনা হলে সহজে সেটা ব্যবস্থা করে একটা উত্তর পাওয়া যায়

 ভোটারদের মতামত সম্পর্কে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমার মনে হয়, নির্বাচনে সহিংসতা বা দ্বন্দ্ব যা-ই হোক না কেন, সেটা হয়তো ভোটারদের ওপর প্রভাব ফেলবে। কিন্তু ভোটারদের পছন্দ একই থাকবে।

জরিপের জন্য ভোটারদের কাছে ব্যালট পেপার দিয়েছি। সেই ব্যালটে তারা ভোট দিয়েছেন। জরিপে আরও বলা হয়েছে, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেখানে মহাজোট ভোট পেয়েছিল ৫৭ শতাংশ। বিএনপি জোট পেয়েছিল ৩৭ শতাংশ ও অন্যরা পেয়েছিল ৬ শতাংশ ভোট। এবারের জরিপ তারই ধারাবাহিকতা।

তবে যেহেতু জরিপটি মনোনয়ন প্রক্রিয়ার আগে করা হয়েছিল, সেহেতু আমরা প্রার্থীদের ব্যাপারে জনমত জানতে পারিনি। কিন্তু দলগতভাবে ৫১টি আসনেই আওয়ামী লীগ এগিয়ে আছে। ১২ দশমিক ২ শতাংশ নিয়ে সবচেয়ে কম ব্যবধানে জয়ের সম্ভাবনা জয়পুরহাট-১ আসনে আর ৭৫ শতাংশ নিয়ে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের সম্ভাবনা বরিশাল-৪ আসনে। যারা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি তাদের সবচেয়ে কম সংখ্যা দেখা যাচ্ছে টাঙ্গাইল-৩ আসনে, ২ দশমিক ৫ শতাংশ। এই আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নিকটবর্তী দলের ব্যবধান ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সিদ্ধান্তহীনদের সংখ্যা সাতক্ষীরা-৩ আসনে, যেখানেও আওয়ামী লীগের জয়লাভের ব্যবধান ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

গবেষণার প্রতিবেদনের বরাতে সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, গড়ে আওয়ামী লীগের জন্য সমর্থন ৬৬ শতাংশ মানুষের, বিএনপির জন্য ১৯ দশমিক ৯ শতাংশ আর ৮ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটার সিদ্ধান্ত নেননি। যারা সিদ্ধান্ত নেননি তাদের থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থনের ব্যবধান অনেক বেশি। আরও গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি তা হচ্ছে কোন আসনেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সমর্থনের পার্থক্য ১০ শতাংশের মধ্যে নেই। শুধু ২টি আসনেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সমর্থনের পার্থক্য ২০ শতাংশ।

এর মধ্যে ২৮টিতে অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি জরিপকৃত আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সমর্থনের পার্থক্য ৫০ শতাংশের বেশি। সমর্থনের পার্থক্য ১০ শতাংশের এর বেশি হলেই দ্বিতীয় দলটির জন্য তা পার করা মোটামুটি অসম্ভব হয়ে যায়, আর ২০ শতাংশ এর বেশি পার্থক্য থাকলে একাধিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দ্বারাও তা টপকানো সম্ভব হয় না।

এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠাতা পেয়েছিল। দুই বছর জরুরী অবস্থার পর ২০০৮ সালের ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০, বিএনপি ২৯, জাতীয় পার্টি ২৭, জাসদ তিনটি, ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি, জামায়াতে ইসলামী দুটি, এলডিপি একটি, বিজেপি একটি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চারটি আসনে জয়ী হন।

Bootstrap Image Preview