একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আগামীকাল সোমবার থেকে সারাদেশে মাঠ পর্যায়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন হচ্ছে।
এদিকে আজ রবিবার সেনাবাহিনীর সদস্যদের স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে স্বাগত জানাই। আশা করছি সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের ফলে নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করবে যা এতদিন ছিল না।’
বিবৃতিতে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আশা করছি সশস্ত্র বাহিনী জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কিংবা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করবে না। সশস্ত্র বাহিনীর ওপর দেশ ও দেশের ইমেজ নির্ভর করে।’
আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে তারা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ।
বিবৃতিতে সশস্ত্র বাহিনী কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য দেশের ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করবে না বলেও আশা প্রকাশ করেছেন ড. কামাল হোসেন।
আগামিকাল ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে সশস্ত্র বাহিনীর।
গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়।
পরিপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিজাইডিং কর্মকর্তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোট গণনাকক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে সশস্ত্র বাহিনী। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনে ইসির কাজে যাবতীয় সহায়তা দেবে সশস্ত্র বাহিনী। প্রয়োজনে পরিস্থিতি বিবেচনা বা নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এই বাহিনী।’
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনী। অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো উপায়ে বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে ঘটনাস্থলে থাকা সর্বোচ্চ পদের ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারবেন। জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে কমিশন্ড অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেফতার করার নির্দেশ দিতে পারবেন। সামরিক শক্তি প্রয়োগের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিত নির্দেশ দেয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও মৌখিক নির্দেশ দেয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা লিখিত আকারে দেবেন।’
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘ঝুঁকির বিবেচনায় প্রতিটি জেলায় নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে কম-বেশি করা যাবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের বিবেচনায় প্রতিটি স্তরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনাসদস্য সংরক্ষিত হিসেবে মোতায়েন থাকবেন। বিমানবাহিনী প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান জননিরাপত্তা বিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও বাহিনীগুলোর অনুরোধে উড্ডয়নে সহায়তা করবে।’