নাম রুবেল রানা। বাবা দিনমজুর আব্দুল খালেক বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুৎপাড়া এলাকায় খাস জমিতে তাবু তৈরী করে কোনমতে পরিবার নিয়ে দিনযাপন করছেন। আর্থিক সংকট আর অভাব নিয়ে দিন যাপনের কারণে স্কুলেও যাওয়া হয় না রুবেলের।
কয়েকদিন ধরে রুবেল নিজের শরীরে পরিহিত কাপড়ে আলপিন দিয়ে পোস্টার লাগিয়ে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী দবিরুল ইসলামের প্রচারণা চালাচ্ছেন। মাঝে প্রচার গাড়ীগুলোকে রাস্তায় থামিয়ে তাতে উঠে চলে যাচ্ছেন বিভিন্ন হাট-বাজারে, দূরের গ্রাম-গঞ্জে।
নেতাকর্মীদের সুরে তাল মিলিলে রুবেলও এখন বলতে পারছে, “৩০ তারিখ শুভ দিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন, ঈগল পাখি দিচ্ছে ডাক, নৌকা মার্কা জিতে যাক, দবিরুল ভাই ভাল লোক, জয়ের মালা তারই হোক”।
এছাড়াও গানের সুরে সুরে রুবেল বলছে, “সবার আগে আমরা সবাই দবিরুল ভাইকে চিনিরে, দবিরুল ভাইকে চিনি....।
জানতে চাইলে রুবেল জানায়, ঠান্ডার তাবুতে থাকপা মেনায় না, রাইতে নিন (ঘুম) আসে না। হামার জমি নাই, আব্বার কাছে টেকা(টাকা) নেই, ঘর তুলিবা পারি না। মি এমপি’র বাড়ীত গেইসনু, এংকে (এভাবে) নির্বাচনের প্রচার চালাবা কহিজে। যদি এইবার এমপি হবা পারে, তাহলে মোক এরা ঘর বেনা দিবে। মি অইরা ঘরত আব্বা-আম্মার সাথে থাকিবা পারিম। শীতত আর কষ্ট হবেনি।
রুবেলের বিষয়ে বাবা দিনমজুর আব্দুল খালেক জানায়, আশা ছিল পোলাডারে পড়ালেখা করাইয়া চাকরি নিয়া দিমু। পেটের ভাত জোগাড় করতে স্বামী-স্ত্রী হিমসিম খাচ্ছি। পড়ালেখা করাইয়া আর কি হবে। আর একটু বড় হলে কোন কামে দিয়া দিমু।
ঠাকুরগাঁও-২ আসনের আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ দবিরুল ইসলাম রুবেলের বিষয়ে বলেন, সে আমার কাছে এসেছিল। আমি নির্বাচিত না হলেও তার একটা ঘরের ব্যবস্থা এবার করে দিবো। পাশাপাশি পড়ালেখা করার জন্য স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিবো। তার নির্বাচনী প্রচারণার উৎসাহ দেখে আমি মুদ্ধ হয়েছি।
ঠাকুরগাঁও-২ আসনে চারজন প্রার্থী সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ছয়বার নির্বাচিত সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ দবিরুল ইসলাম, ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম, জাকের পার্টির প্রার্থী গোলাপ ফুল প্রতিকে উপজেলা জাকের পার্টির সভাপতি সামশুজ্জোহা এবং ইসলামী আন্দোলনের পাখা প্রতিকে রেজাউল ইসলাম।