Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ যাচাই করার পরামর্শ আ.লীগের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:০২ PM
আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৯:০২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেছেন অসত্য অভিযোগ নির্বাচন কমিশনকে দেওয়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একজন ডিসি এবং দুইজন এডিসি, চারজন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে উল্লেখ করে তা প্রত্যাহার করতে বা তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আগে ওপর পক্ষের বক্তব্য শোনার বিষয়ে আশা করি নির্বাচন কমিশন আরও যত্নবান হবেন, আরও সতর্ক হবেন।

বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

আব্দুর রহমান বলেন, নির্বাচন কমিশনের এই এখতিয়ার অবশ্যই রয়েছে, তবে নির্বাচন কমিশন যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছেন, তারা আত্মপক্ষের সমর্থন দেওয়ার সুযোগ হতে বঞ্চিত হয়েছেন। একজন অভিযোগ করলেই, তার সত্যতা যাচাই বাছাই না করে, তাকে প্রত্যাহার করা বা তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আগে ওপর পক্ষের বক্তব্য শোনার বিষয়ে আমরা আশা করি নির্বাচন কমিশন আরও যত্নবান হবেন, আরও সতর্ক হবেন।

শুরু থেকেই বিএনপি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ করে আব্দুর রহমান বলেন, নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর থেকেই বিএনপি তাদের জন্মগতস্বভাব অনুযায়ী ব্যাপক মিথ্যাচার অপপ্রচার ও বিভ্রান্তকর মন্তব্যের মধ্য দিয়ে, নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্ট, উস্কানি, ভয়-ভীতি সঞ্চারের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের আগে পরিবেশকে উত্ত্যক্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই বিএনপি নেতাকর্মীদের কথাবার্তা, আচার-আচরণে নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্টের বিষয় পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাতেই প্রতীয়মান হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে এক ধরনের ধূম্রজাল সৃষ্টির দুরভিসন্ধিতে লিপ্ত। তাদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশন কে প্রশ্নবিদ্ধ করা, প্রজাতন্ত্রের পেশাদার ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ছড়ানো অপপ্রচারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সমূহকে বিতর্কিত করা এবং সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে জনমনে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভীতি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করাই যেন বিএনপির মূল লক্ষ্য।

বিএনপির ভরাডুবি নিশ্চিত জেনেই নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এমন দাবি করে আব্দুর রহমান বলেন, দুর্নীতিবাজ, সাজাপ্রাপ্ত, পলাতক আসামি তারেক রহমানের মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিএনপির নেতাকর্মীরা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছে। বিএনপির দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির কারণে তাদের নেতাকর্মীরা আজ গভীর হতাশায় নিমজ্জিত। নির্বাচনের মাঠে নেতাকর্মীশূন্য বিএনপির ভরাডুবি নিশ্চিত এই আশঙ্কায় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের নীলনকশা অনুযায়ী জনগণের নির্বাচনকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে, পরিকল্পিতভাবে নাশকতা ও সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।

মুজিব কোট পড়ে বিএনপি জামায়াত সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্র করছে এমন অভিযোগ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট ভুয়া ব্যালট পেপার ছাপানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। এমনকি নির্বাচনের পূর্বে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি-জামাতের ক্যাডাররা গায়ে মুজিব কোট পরিধান করে নৌকা মার্কা ব্যাচ লাগিয়ে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির এক গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীরা পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। প্রার্থীরা নিজেদের লোক দিয়ে গোলযোগ সৃষ্টি করছেন, আওয়ামী লীগ ও মহাজোট প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে হামলা অগ্নিসংযোগ এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। তারা গতকাল ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের অফিসে বোমা হামলা চালিয়েছে, মুন্সিগঞ্জ এ ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী মাহি বি চৌধুরী ওপর হামলা ও গুলি বর্ষণ, সিলেট ৪ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর অফিসে হামলা, টাঙ্গাইলের সখীপুরে পুলিশের গাড়িতে হামলা, পাবনার সাঁথিয়ায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে অগ্নিসংযোগ, খুলনার পাইকগাছায় নৌকা প্রতীকের অফিসে পাঁচটি ককটেল বোমা হামলা, শেরপুর সদর উপজেলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, ঢাকা ১৫ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর চালিয়েছে।

নির্বাচন কেন্দ্র পাহারা দেওয়ার ঘোষণায় বিএনপি জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড.কামাল হোসেনের কেন্দ্র পাহারার ঘোষণায়, বিএনপি জামায়াত সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীকে আরো বেপরোয়া করে তুলেছে।

আপনারা জানেন নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর দিনই নোয়াখালী, ফরিদপুর, পাবনা, ঈশ্বরদীতে, বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতারা একদিকে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীকে হত্যা করে অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নির্লজ্জভাবে নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা অভিযোগ করছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জাকর। নির্বাচনের ১০ দিন বাকি থাকতেই, বাংলার জনগণ বিএনপি-জামায়াত- ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের পক্ষে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষে অকুণ্ঠ সমর্থন করে প্রদর্শন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর সবুর, উপ দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মাহরুফা আখতার পপি প্রমুখ।

Bootstrap Image Preview