নাশকতার গায়েবী মামলায় উচ্চ আদালতের জামিনে থাকার পরও সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বোর্ড সভাপতি আমির শাহকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে গেছে তাহিরপুর থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত পৌণে ৯টায় তাহিরপুরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারের ইলা-নীলা ডিপার্টমেন্টার স্টোর থেকে বোর্ড পরিচালককে থানা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়।
আমির শাহ উপজেলার বাদাঘাট (উওর) ইউনিয়নের বাদাঘাট বাজারের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ছবর আলী শাহর ছেলে। তিনি সুনামগঞ্জ পল্লী বিদুৎ সমিতির বোর্ড সভাপতি ও তাহিরপুর থানার এলাকা পরিচালক। পাশাপাশী উপজেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
বোর্ড পরিচালক আমির শাহর স্ত্রী মিসেস মাকসুদা বেগম মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় সাংবাদিকদের জানান, তাহিরপুরে ব্যবসায়ী লাঞ্ছিত করার জের ধরে অতি উৎসাহী ওসির রোশানলে পড়ে বিগত নভেম্বর মাসে গায়েবী নাশকতার মামলায় অন্যান্যদের সাথে আমার স্বামীকেও আসামি করা হলে ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে গত ১৭ নভেম্বর ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন নেয়া হয়। পরবর্তীতে ওই মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে প্রথমে এক সপ্তাহ ও পরবর্তীতে ৭ জানুয়ারি ২০১৯ সাল পর্যন্ত আগাম জামিন নেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, নতুন করে আমার স্বামীর নামে কোন ধরণের মামলা না থাকলেও ওসি ও স্থানীয় একটি মামলাবাজ মহলের ইন্দনে থানা পুলিশ বিনা কারনে আমার স্বামীকে ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান থেকে আটক করে নিয়ে গেছে।
তাহিরপুর থানার ওসি শ্রী নন্দন কান্তি ধর মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টায় গণমাধমের নিকট বোর্ড পরিচালক আমির শাহকে গ্রেফতারের পর থানা হেফাজতে নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পূর্বের নাশকতার মামলায় জামিন নিয়ে থাকলেও বিয়য়টি আমার জানা নেই। গত ১২ ডিসেম্বর উপজেলার জনতাবাজারের স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতার দায়েরকৃত একটি নাশকতার মামলায় তাকে সন্দেহজনক আসামি হিসাবে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
জনতাবাজারের নাশকতার মামলায় আমির শাহ এজাহারনামীয় আসামী কী না? এমন প্রশ্নের উওরে ওসি জানান এজাহারে তার নাম নেই।
সুনামগঞ্জ-১ আসনের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত বিএনপি (ধানের শীষ) প্রাার্থী সাবেক এমপি নজির হোসেন আমির শাহ গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, গত ১২ ডিসেম্বর বুধবার উপজেলার বড়দল উওর ইউনিয়নের এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে চাপ প্রয়োগ করে বাদী বানিয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৪৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে পাঁচজনকে গ্রেফতার করায় ওসি। এছাড়াও ওসি ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন নেতাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, অতি উৎসাহী মামলাবাজ তাহিরপুর থানার ওসি শ্রী নন্দন কান্তি ধর নির্বাচনী মাঠ থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সড়িয়ে রাখতে গায়েবী মামলায় একের পর এক ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা, গ্রেফতার, হুমকি ও হয়রানী করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ওসির প্রত্যাহার দাবি করে আমি জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং অফিসার, ডিআইজি, পুলিশ হেডকোয়ার্টার ও নির্বাচন কমিশনানের নিকট ১৫ ডিসেম্বর লিখিত আবেদন করেছি, এরপর থেকেই ওসি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।