টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ সিদ্দিকীর গাড়ি বহরে হামলা ও ভাংচুর করা হয়েছে।
রবিবার দুপুর ২টায় কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের বল্লবভবাড়ি ও সরাতৈল এলাকায় আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর গাড়িবহরে হামলা হয়। এ সময় বহরে থাকা চারটি গাড়ি ভাঙচুর এবং তার অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন।
গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকতা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন সেই দুপুরে। প্রথমে বেড, কাঁথা, বালিশ বিছিয়ে বসে পড়েন আওয়ামী লীগের সাবেক এই মন্ত্রী। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও একটুও নড়েননি তিনি। বরং তাঁবু গেঁড়ে,লেপ নিয়ে রাত্রিযাপনের সব প্রস্তুতি সেরে শুয়ে পড়েছেন তিনি। স্থান ছাড়বেন না দাবি আদায় না হওয়া অব্দি।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে দেখা গেছে বেড, কাঁথা, বালিশ বিছিয়ে ও লেপ-কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছেন তিনি।
লতিফ সিদ্দিকী হামলার জন্য আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারীর কর্মীদের দায়ী করে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, হামলাকারীদের গ্রেফতার ও কালিহাতী থানার ওসি মোশারফ হোসেনকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত সেখানেই বসে থাকবেন বলে জানান তিনি।
আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী সোহেল হাজারীর নির্দেশে স্থানীয় চেয়ারম্যান হযরত তালুকদার, তোতা ও তার ছেলের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। আমার নির্ধারিত সভা ছিল গোহালীয়াবাড়ি। সেখানে গাড়ি বহর পৌঁছামাত্র ২০-২৫টি মোটরসাইকেলে করে এসে দুর্বৃত্তরা ইটপাটকেল মারা শুরু করে। সেখানের সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে গেলে দুর্বৃত্তরা মিছিল নিয়ে সেই বাড়িতেও হামলা করে। তারা আমার চারটি গাড়ি ভেঙে চুরমার করে দেয়। অনেকে আহত হয়েছেন। এ হামলায় কালিহাতী থানার ওসির প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন করা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। তাই নির্বাচন করতে এসেছি। জনগণ যে রায় দেবে তা মাথা পেতে নেব। কিন্তু এখন দেখছি ভয়াবহ ব্যাপার।
তিনি বলেন, নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের নিশ্চয়তা না পেলে আমি এখান থেকে উঠব না। কালিহাতীতে অবস্থান করলে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাবে। জনগণ দুর্ভোগে পড়বে। সরকার বিব্রত হোক আমি তা চাই না। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এদিকে, জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় লতিফ সিদ্দিকীর কাছে গিয়ে হামলাকারীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ চাওয়া হয়েছে। আমরা অবশ্যই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তাদের গ্রেফতারে ইতোমধ্যে পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।