Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দেখে এলাম হিমালয়ের রাজকন্যাকে

তাইজুল ইসলাম
প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৩:৪৬ PM
আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৩:৪৬ PM

bdmorning Image Preview


কিছুদিন হলো দেশে ফিরলাম। প্রায় ১ মাস হিমালয়ের রাজকন্যা নামে খ্যাত নেপালে কাটালাম। ১টি মাস মনে হয়  স্বপ্নের মধ্যেই চলে গেল। স্মৃতির রেশগুলো এখনো উজ্জ্বল হয়ে আছে। যেখানে সুযোগ পেয়েছিলাম বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সাথে মত ও সংস্কৃতি বিনিময়ের।

বলছি গত ৪ ডিসেম্বর নেপালের কাঠমুন্ডুতে হয়ে যাওয়া ইউনিভারসেল পিস ফেডারেশন (ইউপিএফ) কর্তৃক "এশিয়া পেসিফিক সামিট-২০১৮" এর কথা। উক্ত সামিটের অায়োজক হিসেবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে দুইজন মনোনীত হয়েছিল। তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমি তাইজুল ইসলাম ও আরিফুল ইসলাম।

অায়োজক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে পেয়েছিলাম ১২টি দেশের প্রায় ৬০ জন স্টুডেন্টসদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। তাদের সাথে কাজ করতে গিয়ে শিখেছি - কীভাবে তৎক্ষণাৎ চেলেঞ্জিং কাজের মোকাবিলা করতে হয়? কীভাবে নতুন একটি পরিবেশে নিজেকে সহজে খাপ খাওয়ানো যায়? এবং কীভাবে নিজের মধ্যে নেতৃত্বের গুণগুলোর সহজে বিকাশ ঘটানো যায়?

আমি কাজ করেছিলাম "ইন্টারন্যাশনাল ডেলিগেস একোমোডেশন ও হসপিটালিটি" ডিপার্টমেন্টে। নেপালের নতুন একটি সংস্কৃতিতে গিয়ে প্রায় ২৫০০ আন্তর্জাতিক ডেলিগেটসের জন্য হোটেল ম্যানেজ করা এবং ট্রান্সপোর্টেশন ও হসপিটালিটি দল ম্যানেজ করা আমার জন্য অনেকটা চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিলো। কারণ, আন্তর্জাতিক ডেলিগেটসদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আমাদের অনেক সচেতন থাকতে হয়েছিলো।

তা ছাড়া, ১২টি দেশের ৬০ জন স্টুডেন্টস ভিন্ন ধর্ম ও ভিন্ন সংস্কৃতি হতে এসে একটি টার্গেট নিয়ে একসাথে কাজ করার এবং সবাই সবার সাথে আইডিয়াগুলো বিনিময় করার একটি চমৎকার সুযোগ পেয়েছিলাম। যেখানে কাজ করতে গিয়ে নতুন অনেক কিছু শিখেছি এবং আমি ও নতুন অনেক আইডিয়া শেয়ার করেছি, যা আমাদের কাজকে সহজ করে দিয়েছে। শিখতে পেরেছি কীভাবে ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সাথে সহজে ভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলা যায়। শিখতে পেরেছি মানুষ কাজের সুবিধার্থে অথবা কোনো টার্গেট পূর্ণ করার জন্য কীভাবে নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে আসা যায় এবং কতটা প্ররিশ্রমী ও আত্মপ্রত্যয়ী হলে নিজের কাজ শেষ করে অন্যের কাজে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসা যায়।

বাংলাদেশ থেকে যখন ৩০ জনের একটি দল ডেলিগেটস হিসেবে সামিটে অংশগ্রহণের জন্য কাঠমুন্ডু গিয়েছিলো, তখন আমাকে "বাংলাদেশ কো-অর্ডিনেটর" হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। "বাংলাদেশ কো-অরডিনেটর" হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক নতুন কিছু শিখেছি এবং সুযোগ পেয়েছিলাম নিজের মধ্যে নেতৃত্বের গুণগুলো ভালোভাবে চর্চা করার। বাংলাদেশ টিম নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চলাফেরার ক্ষেত্রে আমাকে অনেক ধৈর্য্যের ও সময়ানুবর্তিতার পরিচয় দিতে হয়েছিল।

২ ডিসেম্বর, "ইউয়ুথ এন্ড স্টুডেন্টস ফর পিস (ওয়াইএসপি) সিমপোজিয়াম" এ এশিয়া ওয়াইএসপি'র প্রসিডেন্ট রবার্ট কিটেল'র সেশন থেকে শিখতে পারি যে, সামাজিক, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যুবক রা কীভাবে ভূমিকা পালন করতে পারে। তা ছাড়া, আরও জানতে পারি 'ওয়াইএসপি'র বিভিন্ন ন্যাশনাল লিডারদের কাজের অভিজ্ঞতা, যা আমাদেরকে সামাজিক কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছে।

৩ ডিসেম্বরে হয়েছিল আমাদের কাঙ্খিত ও এশিয়াতে ইউপিএফ'র সবচেয়র বড় ইভেন্ট "এশিয়া প্যাসিফিক সামিট-২০১৮"। যেখানে শুনতে পাই, "ইউ পি এফ" বড় বড় লিডারদের অভিজ্ঞতা ও ইউ পি এফ এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। তাদের লেকচারগুলো থেকে জানতে পেরেছি যে, সকল ধর্ম, বর্ণ ও জাতিভেদ ভুলে কীভাবে একই প্লাট ফর্মে এসে, নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তুলে, সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনে শান্তি স্থাপন করা যায়।

প্রায় ১ মাস এই সামিটের অায়োজক কমিটির সাথে কাজ করার পর, আমার "ইন্টারন্যাশলান ডেলিগেটস অ্যাকোমোডেশন এন্ড হসপিটালিটি" ডিপার্টমেন্টের প্রধান 'কেশাব শ্রেষ্ঠা' ও বাংলাদেশের ন্যাশনাল কোঅরডিনেটর 'টিকা রাজ বিশ্বকর্মা' যখন আমার কাজের প্রশংসা করছিলেন, তখন মনে হচ্ছিল তারা পুরা বাংলাদেশের প্রশংসা করতেছিল।

Bootstrap Image Preview