শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বের হওয়ার পথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের উপর মেজাজ হারিয়েছেন।
শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যান ড. কামালসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মেজাজ হারান তিনি।
এ সময় জামায়াতে ইসলামীর প্রসঙ্গে ড. কমাল হোসেনের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কত পয়সা পেয়েছো এসব প্রশ্ন করতে? চিনে রাখবো। কত পয়সা দিয়েছে? চুপ করো, খামোশ। শহীদ মিনারের এসে শহীদদের অশ্রদ্ধা করো। শহীদদের কথা চিন্তা করো।’
এর আগে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছি। লাখো শহীদ জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, সেই স্বাধীনতাকে আমরা ধরে রাখি। অর্থপূর্ণ করি সকলের জন্য। যারা ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে আখের গোছাতে চাচ্ছেন তাদের জন্য নয়। শোষণমুক্ত সুন্দর সমাজের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এর পূর্বশর্ত হচ্ছে জনগণের ঐক্য।’
এদিকে শুক্রবার সকাল ১০টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামালের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। হামলার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান।
শায়রুল কবির খান বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা আজ সকালে মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যান। তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বের হওয়ার পর গাড়িতে ওঠা মাত্র অতর্কিত হামলা চালায় একদল যুবক।
তারা ইটপাটকেল ছোড়ে ও লাঠিসোটা নিযে হামলা করে। ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মীদের কিলঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এতে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বেশ কয়েকজন আহত হন।
গণফোরামের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর লতিফুল বারী হামীম জানান, ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মেইন গেটে এলে ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হঠাৎ হামলা চালানো হয়।
হামলার জন্য আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে দায়ী করেন লতিফুল বারী। তিনি বলেন, হামলায় কামাল হোসেনের গাড়ি খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও বহরের পেছনে থাকা ঐক্যফ্রন্ট নেতা আ স ম আবদুর রব, জগলুল হায়দার আফ্রিক, ঢাকা-১৪ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সিদ্দিক সাজুর গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১০-১২ জন রক্তাক্ত জখম হয়েছেন।
এ বিষয়ে বিকাল ৩টায় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন পল্টনে ব্রিফ করবেন বলে জানান শায়রুল কবির খান।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বের হওয়ার সময় অনেক মানুষের জটলা দেখতে পাই। আমি আগে নিরাপদে বের হয়ে গেলেও পেছনে ড. কামাল হোসেন ও আ স ম রবের গাড়ি হামলার শিকার হয়।
হামলায় আহত ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম জানান, ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৫০-৬০ জন ছেলে হঠাৎ বিএনপিসহ জাতীয় নেতাদের গাড়িবহরে হামলা চালায়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। অনেকের মাথা ফেটে গেছে।
তিনি জানান, হামলায় ঢাকা-১৪ আসনের ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী এসএ সিদ্দিক সাজুও আহত হয়েছেন। এ বিষয়ে সাজুর বাসায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
তবে দারুস সালাম থানার ওসি সেলিমুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, সামান্য হৈ হৈ শুনে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি সেখানে কেউ নেই।হামলার বিষয়ে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগও করেনি।