Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বেরোবিতে ‘রোকেয়া অধ্যয়নের’ নিয়ম আছে প্রয়োগ নেই

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:০৪ PM
আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:০৪ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী


বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) পাঠ্যসূচিতে ‘রোকেয়া স্টাডিজ’ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়নি এখনও। বলা হচ্ছে, রোকেয়া চর্চা যত বাড়বে মেয়েরা তত বেশি স্বপ্নপূরণে অনুপ্রাণিত হয়ে এগিয়ে আসবে। কিন্তু রোকেয়া চর্চায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ভূমিকা অনেকটা বাতির নিচে অন্ধকারের শামিল।

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়াকে স্মরণীয় করে রাখতে তার নামে নামকরণ হয় প্রথম কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু উচ্চশিক্ষায় এ বিশ্ববিদ্যালয় আজও পাঠ্যসূচিতে যুক্ত করতে পারেনি বেগম রোকেয়াকে। অথচ ‘সুলতানার স্বপ্ন’ বাস্তবে রূপ দিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের পঞ্চম সভার সুপারিশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট সভায় পাঠ্যসূচিতে ‘রোকেয়া স্টাডিজ’ অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। সিন্ডিকেটে অনুমোদনের সাত বছর পর গত ২৫ এপ্রিল বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সভাপতিত্বে ডিনস কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার থেকে প্রত্যেক বিভাগে বাধ্যতামূলকভাবে নন-ক্রেডিট বিষয় হিসেবে পাঠদানের সিদ্ধান্ত হয়। ওই দিনই জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (একাডেমি) ও উপাচার্যের একান্ত সচিব মো. আমিনুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, রোকেয়া স্টাডিজ চালুর লক্ষ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে আহ্বায়ক করে এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনাকে সদস্য সচিব এবং অনুষদের ডিনদের সদস্য করে সিলেবাস প্রণয়ন করতে কমিটি করা হয়।

অথচ কমিটি গঠনের দীর্ঘদিন পর কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা এখনও এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে এই প্রতিবেদককে জানান।

তবে কলা অনুষদের ডিন ও বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. পরিমল চন্দ্র বর্মণ জাগো নিউজকে বলেন, এখনও রোকেয়া স্টাডিজ বিষয়ে পাঠদানের সিলেবাস চূড়ান্ত হয়নি। সিলেবাস প্রণয়ন কমিটি কাজ করছে। তবে কে বা কারা কাজ করছে সে ব্যাপারে সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

কথা বললে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোরশেদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এখনো রোকেয়া স্টাডিজ পাঠ্যসূচিতে রাখার ব্যাপারে বিভাগগুলোকে কিছু জানানো হয়নি। এ ব্যাপারে নির্দেশনা পেলেই পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রী জাগো নিউজকে জানান, সেই অন্ধকার যুগে নারী শিক্ষার আলো বেগম রোকেয়া ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বলেই আজ আমরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছি। কিন্তু তার সম্পর্কে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে জানার সুযোগ নেই বললেই চলে। নেই তার কোনো স্মৃতি ম্যুরালও।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শুধুমাত্র রোকেয়া দিবস ছাড়া মহীয়সী এ নারীকে নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো আয়োজন থাকে না এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টি কেবল তার নামই ধারণ করেছে তার জীবন আদর্শ ধারণ করতে পারেনি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. গাজী মাজারুল আনোয়ার জাগো নিউজকে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরুল নিয়ে পড়ানো হয়। তাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বেগম রোকেয়াকে নিয়ে পড়ালে শিক্ষার্থীদের উপকারে আসবে।

মতামত জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিবার যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে উপাচার্যের বরাত দিয়ে তার একান্ত সচিব মো. আমিনুর রহমান বলেন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে পাঠ্যসূচিতে রোকেয়া স্টাডিজ অন্তর্ভুক্ত হবে।

Bootstrap Image Preview