২০১২ সালে দেশের মাটিতে ও সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজের সুখস্মৃতি নিয়ে দুপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি ওয়ানডে সিরিজে দলের দুই সেরা তারকা সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে পেয়ে আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে বাংলাদেশের। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টায় শুরু হবে প্রথম ওয়ানডে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাসের সাথেই ওয়ানডে সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ। প্রথমমত, ২০১২ সালে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলেছিলো টাইগাররা। পাঁচ ম্যাচের ঐ সিরিজে ৩-২ ব্যবধানে জিতে নেয় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ত, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজটি জিতেছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচের সিরিজ (ঐ সফরে দু’টি টেস্ট ও তিনটি টি-২০ও ছিলো) খেলে টাইগাররা। সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতে মাশরাফির দল।
তবে ইনজুরি থেকে সুস্থ হয়ে ইতোমধ্যে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন সাকিব। তবে দলের আরেক স্তম্ভ তামিম ইকবালও ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে মাঠে ফিরছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নিজের ফিটনেসের প্রমান দেন তামিম। ১৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৩ বলে ১০৭ রান করেন তামিম। এছাড়া ঐ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন সৌম্য সরকারও।
আত্মবিশ্বাসে টগবগ হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে সর্তক বাংলাদেশ। সিরিজটি বেশ প্রতিন্দ্বন্দিতাপূর্ণ হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও কোচ স্টিভ রোডস। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে গতকাল মাশরাফি ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে দুই দলেরই সমান সুযোগ আছেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ফেবারিটের ক্ষেত্রে আমি বলব সমানভাবে। কারণ ওদের দলে কিছু আছে যেটা দুর্দান্ত। একজন ফাস্ট বোলার আছে। জোরে বোলিং করবে। যেটা হয় যে, জোরে বোলারদের অনেক সময় হুটহাট করে উইকেট পড়ে যায়। তাতে শুরুতে চাপ আসে। তাই এই জায়গাগুলো চিন্তা করার ব্যাপার আছে। একইভাবে ওদের কিছু আমাদের থেকে অনেক বেশি সাহায্য পাবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আসলে মাসল পাওয়ার অনেক বেশি। এই ধরনের ফরম্যাটে একজন দুইজন কিন্তু গেইম চেইঞ্জ করে দিতে পারে। এই জায়গাটায় ওদের কয়েকজন আছে এমন, ডেস্ট্রয় করতে পারে। আমাদের ওদের বিপক্ষে এই পার্টটা খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ওদের জন্য ফরম্যাট যত ছোট হবে তত বেশি স্যুট করবে। তাই আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে ওরা যেন জুটি বড় করতে না পারে। আর এমনি এমনি তো জেতা সম্ভব না। অবশ্যই হোম ওয়ার্ক, একইসঙ্গে মাঠে বাস্তবায়নটা শতভাগ ঠিক থাকতে হবে। অন্তত ৮০ ভাগ ঠিক থাকলে হয়তোবা ভালো ম্যাচ হবে। আমি আশা করছি না যে টেস্টের মতো বা আগে পরে যেসব ম্যাচ জিতে আসছি এত সহজ হবে।’
চলতি বছর ওয়ানডে ফরম্যাটটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ‘অপয়া’। কারন বছরের শুরুতে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে সেরার মুকুট পড়তে পারেনি তারা। বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার ছাড়পত্র পেলেও ফাইনালে আফগানিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হার মানে ক্যারিবীয়রা। এছাড়া দেশের মাটিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সঙ্গে ২-১ ব্যবধানে ও ভারতের সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-১ ব্যবধানে হারে তারা। তাই বছরের শেষ ওয়ানডে সিরিজ জিতে ‘অপয়া’ শব্দটি মুছে ফেলতে বদ্ধ পরিকর ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশ দল : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, মোহাম্মদ মিথুন, সাইফ উদ্দিন, আবু হায়দার ও আরিফুল হক।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল : রোভম্যান পাওয়েল (অধিনায়ক), মারলন স্যামুয়েলস, ড্যারেন ব্রাাভো, রোস্টন চেজ, শাই হোপ, দেবেন্দ্র বিশু, চন্দরপল হেমরাজ, শিমরন হেটমায়ার, কেমো পল, কাইরন পাওয়েল, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন, কার্লোস ব্রাফেট, কেমার রোচ, সুনীল অ্যামব্রিস ও ওশানে টমাস।