Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ রবিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

তৃমুখী অভিযোগ; চুক্তির ২১ বছরেও থামেনি পাহাড়ের দ্বন্দ্ব-সংঘাত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৪:৫৯ PM
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৪:৫৯ PM

bdmorning Image Preview


বান্দরবান প্রতিনিধিঃ

পার্বত্য শান্তি চুক্তির দীর্ঘ ২১ বছর পার হলেও থেমে নেই পাহাড়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত। গুম হত্যা চাঁদাবাজিসহ ভ্রাতৃ সংঘাতের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে আছে পাহাড়ের মানুষ। পাহাড়ের চুক্তি নিয়ে তৃমুখী পক্ষ একে অপরকে দুষছে।

চুক্তির পক্ষের মানুষ (জেএসএস) বলছে সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক নয়। সরকার দলের নেতারা বলছেন সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক এবং ইতোমধ্যে চুক্তির বেশীর ভাগ ধারাই বাস্তবায়ন হয়েছে। অপরদিকে বাঙ্গালী সংগঠনের নেতারা বলছে চুক্তি বাস্তবায়ন হলেও চুক্তির উদ্দেশ্য সফল হয়নি।

চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার এই প্রভাব আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন সাধারণ জনগণ। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সাথে শান্তি চুক্তি করলেও পার্বত্যাঞ্চলে অস্ত্রের ঝনঝনানি এখনো থামেনি।

শান্তি চুক্তি বাতিল ও চুক্তি সংশোধনের দাবীতে সমঅধিকার আন্দোলন ও ইউপিডিএফ এবং চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে জনসংহতি সমিতির পাল্টাপাল্টি আন্দোলন আর সংঘাতে আজও উত্তাল পাহাড়ী জনপথ। এ নিয়ে খোদ্ সরকারকে দুষছেন জেএসএস নেতারা।

পার্বত্য জনসংহতি সমিতির বান্দরবান জেলার সভাপতি উচমং মার্মা জানান, বর্তমান সরকার চুক্তি সম্পাদনকারী একটি পক্ষ হিসেবে জোড়ালো প্রত্যাশা ছিল, চুক্তি বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু সরকারের দুই টার্মেও চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের নামে মিথ্যাচার করছে। তাই ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক না কেন চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি জানাই। অন্যথায় পাহাড়ের জনগণ আন্দোলন সংগ্রামে নেমে পড়বে।

এ দিকে জেএসএস এর অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের নেতা একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, নির্বাচন আসলে জেএসএস নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সবসময়ই মিথ্যা অভিযোগ করে, অতীতেও করেছে, এখনো করছে। ইতোমধ্যে শান্তিচুক্তির বেশিরভাগ ধারাই বাস্তবায়ন হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে সরকার আন্তরিক। আগামীতে সরকার ক্ষমতায় আসলে চুক্তির বাকী ধারাগুলো সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন হবে বলেও জানান তিনি।

তবে পাহাড়ের সাধারণ জনগণ বলছেন- শান্তি চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে। এর মধ্যে সব চেয়ে জটিল ভূমি বিরোধ সমস্যা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। যে লক্ষ্যে শান্তি চুক্তি করা হয়েছিল তার সুফল এখনো পাহাড়ের জনগণ ভোগ করতে পারছে না। তাই ভূমি সমস্যা নিরসন করা খুবই জরুরী।

বন ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি বান্দরবান জেলার সভাপতি জুয়াম লিয়ান আম্লাই বলেন, সরকার ভূমি কমিশন গঠন করেছে। আমরা ভেবেছিলাম ভূমি সমস্যা নিরসন হবে। কিন্তু বাস্তবে ভূমি কমিশনের কয়েকটি বৈঠক ছাড়া আমরা আর কিছুই দেখতে পাইনি। বর্তমান সরকার ১০ বছর ক্ষমতায় থেকেও চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। তাই প্রশ্ন জাগে আদৌ কি সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক কিনা! তিনি অচিরেই ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি সহ শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি জানান।

অপরদিকে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের দাবি- সরকার শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে যথেষ্ট আন্তরিক। ইতোমধ্যে চুক্তির বেশিরভাগই বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু যে লক্ষ্যে চুক্তি করা হয়েছিল চুক্তির সে উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি। পাহাড়ে এখনো হত্যা, গুম, খুন, চাঁদাবাজি চলছে। পাহাড়ের অধিবাসীদের কোন উন্নয়ন পরিলক্ষিত হয়নি। শুধুমাত্র অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে।

Bootstrap Image Preview