Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

'বিশ্বে ৩৪ মিলিয়ন মানুষ এইডস আক্রান্ত'

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:২১ PM
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:২১ PM

bdmorning Image Preview


বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ‘এইচআইভি পরীক্ষা করুন নিজেকে জানুন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে পালিত হচ্ছে বিশ্ব এইডস দিবস  এইডস-এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৮৮ সাল থেকে এই দিবসটি পালিত হইয়ে আসছে।

ইউনিসেফের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন মানুষ এইডস-এ আক্রান্ত এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ মিলিয়ন মানুষ এ মরণঘাতি রোগে মৃত্যুবরণ করেছে।

সরকারি হিসাবে, দেশে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৫৮৬ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৯২৪ জনের। তবে আক্রান্ত রোগীর অনুমিত সংখ্যা ১৩ হাজার। প্রায় ৭ হাজার ৫০০ রোগী এখনও শনাক্ত হয়নি। এর আগে, ২০১৬ সালে শনাক্ত হয়েছিল ৪ হাজার ৭২১ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৭৮ জনের।

ইউনিসেফের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস-সম্পর্কিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হতে পারে। অর্থাৎ প্রতি দিন ৭৬ জন কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির বর্তমান ধারা বজায় থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে আনুমানিক ২ লাখ ৭০ হাজার ১৯ বছর বয়সের নিচে কিশোর কিশোরীরা এইচআইভিতে আক্রান্ত হবে।

আমাদের দেশে ২৩ জেলায় এইচআইভিতে আক্রান্তের প্রাদুর্ভাব ও ঝুঁকি বেশি চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী চট্টগ্রামে ১ হাজার ৬৭১ ও সিলেটে ১ হাজার ৯২ জন। সবচেয়ে কম রংপুরে ৫৩ ও ময়মনসিংহে ৬৪ জন রোগী আছে।

সরকারের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্যমতে, শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের এইচআইভির সংক্রমণ ঢাকায় সবচেয়ে বেশি। এদের ২২ শতাংশের শরীরে এইচআইভির সংক্রমণ আছে। দেশে এইডস রোগীর চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। রোগী প্রতি ছয় হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে, এই পরীক্ষার পর কেউ পজিটিভ হলে রোগীর চিকিৎসা ব্যয় সরকার বহন করে থাকে।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এইডস প্রতিরোধ ও নির্মূলে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

এইডস একটি মরণব্যাধি-এ কথা উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশে অদ্যাবধি সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার তুলনামূলক কম হলেও ভৌগোলিক অবস্থান, অসচেতনতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অনিয়ন্ত্রিত আচরণ ও ভ্রান্ত ধারণার জন্য এইডসের ঝুঁকি এখনও বিদ্যমান। তাই প্রতিকারের পাশাপাশি এইডস প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি, কুসংস্কার দূরীকরণ ও মানুষের আচরণ পরিবর্তনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক।’

রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, ‘এইডস নিয়ে মানুষের মাঝে এক ধরনের ভীতি ও লোকলজ্জা কাজ করে। যে কারণে এখনও বহু মানুষ তাদের নিজেদের অবস্থা তথা এইচআইভি/এইডস সংক্রমণের তথ্য জানায় না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের সর্বজনীন স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে তার সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইচআইভি প্রতিরোধের সব কার্যক্রম সফল করার লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, নিয়ন্ত্রিত জীবনব্যবস্থা, মাদক বর্জন, নৈতিকতার উন্নয়ন, ধর্মীয় অনুশাসন এবং আক্রান্তদের প্রতি বৈষম্যহীনতা সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ‘আমাদের চলমান কার্যক্রমসমূহ গুণগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে অব্যাহত রাখতে হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের ন্যাশনাল এসটিডি/এইডস প্রোগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর ড. মো. বেলাল হোসেন বলেন, ‘দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে থেকে একটি র্যা লি অনুষ্ঠিত হবে। র্যা লিটি শেষ হবে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সামনে। এরপর সেখানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এতে প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বিশেষ অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক। এছাড়া স্বাস্থ্যসচিবসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিয়মিত ট্রাডিশন অনুযায়ী, গত এক বছরে নতুন কতজন এইডস রোগী শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে সেটি জানাবেন।’

Bootstrap Image Preview