দলীয় যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ নেতারা যোগ্যদের বাদ দিয়ে নিজ অনুসারীদের মনোনয়ন দিয়েছেন। জাতীয় পার্টির পর বিএনপির বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠলো।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি এ অভিযোগ করেছেন। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ করেন।
মনি দাবি করেন, কমিটি গঠন, স্থানীয় সরকার ও জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের সঙ্গে বিএনপির অধিকাংশ নেতাই জড়িত। টাকা নেন না, বিএনপিতে এমন নেতা পাওয়া বিরল। এ ক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার বিরুদ্ধে কাউকে কখনোই এমন অভিযোগ করতে শুনিনি।
ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসন চেয়ে ডিএল সাধারণ সম্পাদক বলেন, ময়মনসিংহ-৮ আসনে আমি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি। আন্দোলন-সংগ্রামে আমার ভূমিকা রয়েছে। একাধিকবার গ্রেফতার ও মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। ১৮ দলীয় জোট গঠনের সময় খালেদা জিয়া আমার নেতা অলি আহাদের কাছে আমাকে মূল্যায়নের আশ্বাসও দিয়েছেন। সব মিলিয়ে ময়মনসিংহ-৮ আসনটি আমাকে ছেড়ে দিতে হবে। তবে আমাকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া সম্ভব না হলে সেখানে আমার বিরুদ্ধে ধানের শীষের কোনো প্রার্থীকেও রাখা যাবে না।
তিনি বলেন, ময়মনসিংহ-৮ আসনে সাবেক এমপি শাহ নুরুল কবির শাহীন ও লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবুকে ধানের শীষের প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে বাবুকে টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
মনি বলেন, প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়ার আগে লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের বাসায় যান। আমার ধারণা, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বাবুকে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছেন শাহজাহান। পরে হয়তো তাকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হবে। কিছুদিন পরে এ বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, নির্বাচন যদি খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন না হয়ে বাণিজ্যের জন্য হয়, তাহলে আমার বলার কিছু নেই।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও মোহাম্মদ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ করেন ২০ দলীয় জোটের এই নেতা। তার দাবি, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দে শাহজাহান মোটা অঙ্কের টাকা নেন। যোগ্য প্রার্থী না দেয়ায় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী তৃতীয় হয়।
বিএনপির বিরুদ্ধে ২০ দলীয় জোটকে অবমূল্যায়নের অভিযোগও আনেন মনি. জোটের শরিক দলের নেতারা গ্রেফতার, মামলা-হামলার শিকার হলেও বিএনপি এ ব্যাপারে উদাসীন।
এ সময় সম্প্রতি নিজের পুলিশি হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, চেষ্টা করেও এ ব্যাপারে আমি বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জানাতে পারিনি। ম্যাসেজ দিলেও তারা উত্তর দেননি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে বিষয়টি অবহিত করলেও তিনি তা গণমাধ্যমকে জানাননি।
মনি আরও বলেন, আমরা ১৮ দলীয় জোট (বর্তমানে ২০ দলীয় জোট) সৃষ্টি করেছি। আমরা এই জোটেই আছি। আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন বেগবান করব।