Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ সোমবার, মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ইয়েমেনে আরেক আইএসের ভরণ-পোষণ করছে আরব আমিরাত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০১৮, ১০:০৫ PM
আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮, ১০:০৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আদর্শের অন্ধ অনুসারী আবু আল-আব্বাস। যুক্তরাষ্ট্রের জঙ্গি তালিকায় রয়েছে তার নাম। তায়েজ শহরের অধিকাংশ এলাকা নিজের দখলে রেখেছে ৪৭ বছর বয়সী ইয়েমেনি এ কমান্ডার। রয়েছে নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী।

তার এ জঙ্গি বাহিনীর ভরণ-পোষণ করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। অর্থ, সামরিক সরঞ্জাম ও সমর্থন- সবই পায় তারা। মার্কিন নেতৃত্বাধীন সৌদি জোট বিমান হামলায় হুথিদের হত্যা করছে। আর সে শূণ্যস্থান দখল করছে আব্বাস বাহিনী। দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। কায়েম করছে সৌদি স্বার্থ।

উচ্চ প্রযুক্তির মার্কিন অস্ত্র নিয়ে বুক চিতিয়ে বিদ্রোহীদের খুন, আটক ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধকবলিত ইয়েমেনে আরেক আইএস জঙ্গিগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে এ বাহিনী। কয়েকটি সূত্রের বরাতে বুধবার কাতারভিত্তিক পত্রিকা আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

আব্বাসের আসল নাম আদিল আবদুহ ফারি উসমান আল-ধুবানি। গত বছর সে আরব আমিরাতের কাছ থেকে ৪০টি ট্রাক ও প্রায় ৬ লাখ ডলার অর্থ গ্রহণ করেছে। আল কায়দার আরব শাখা (একিউএপি) ও আইএসের ইয়েমেনি শাখায় অস্ত্র ও অর্থ সহায়তার জন্য তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে।

এ নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সামরিক রসদ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে আরব আমিরাত। সূত্রগুলো বলছে, আরব আমিরাতের কাছ থেকে রাজনৈতিক সহায়তাও পাচ্ছে আব্বাস। এডেন সমুদ্রবন্দরে আমিরাতি সেনাদের সঙ্গে সামরিক যোগাযোগও রয়েছে তার।

২০১১ সাল থেকে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ছক কষছে আব্বাস ও তার সমর্থকরা। যুবকদের নিয়ে আব্বাসের গঠিত যুববাহিনীর নাম ‘দ্য জার্মান ট্যাংক’। দাম্মাজ শহরের ফুটবল মাঠে সুন্নি সালাফি অনুসারী ছাত্রদের প্রশিক্ষণ দেয় সে।

তিন বছর পর ২০১৪ সালে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষ জোরালো হলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে টিকতে না পেরে দাম্মাজ থেকে পালিয়ে তায়েজে আসে আব্বাস বাহিনী।

সেখানে ‘হুম্মাত আল-আকিদা’ নামের এক সশস্ত্র গোষ্ঠী গড়ে তোলে সে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযানের লক্ষ্য নিয়ে গড়া এ গোষ্ঠীর কারণে আব্বাসের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। কোনো সামরিক জ্ঞান বা একাডেমিক পড়ালেখা না থাকলেও আব্বাসকে কর্নেল পদে নিয়োগ দেন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদি।

এরপর থেকে আব্বাসের রাজত্ব বাড়তে থাকে। কাড়ি কাড়ি রসদ আসতে থাকে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত থেকে। কয়েকটি মানবাধিকার গোষ্ঠীর ভাষ্য অনুসারে, আব্বাস বাহিনীকে অর্থ, অস্ত্র ও সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে আরব আমিরাত।

ইয়েমেনে আব্বাস বাহিনীর সহায়তায় গোপন কারাগার ও জিজ্ঞাসাবাদ কেন্দ্র গঠন করেছে আরব আমিরাত। নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক ফেলো নিকোলাস হেরাস বলেন, ‘আব্বাস তায়েজ শহরে রাজত্ব করতে চায়। সেখানে তার সালাফি বিশ্বাসের ভিত্তিতে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় সে। আর আমিরাত তাকে এ কাজে সহায়তা দিচ্ছে।’

২০১৭ সালে আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ উঠলে তা অস্বীকার করেছিল দেশটি। হুথিদের তাড়িয়ে আব্বাস বাহিনী তায়েজ শহরের অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর রাস্তায় তিনটি ট্যাংক নামিয়ে রুটিনমাফিক প্রহরা দেয় তারা।

তায়েজ শহরে একটি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে রেখেছে আব্বাস বাহিনী। বেআইনি আটক ও গুমের ঘটনা এখন সেখানে হরহামেশাই ঘটছে। আব্বাস বাহিনীর এসব কর্মকাণ্ড প্রতিহত না করে বরং ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছে ইয়েমেন সরকার।

Bootstrap Image Preview