Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ রবিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

'ও যেন লাশও না দেখে' জামাই শ্বশুরের সম্পর্ক পাল্টে দিল নির্বাচন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০১৮, ১০:০৩ PM
আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮, ১০:০৩ PM

bdmorning Image Preview
ছবি: সংগৃহীত


ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে জামাই-শ্বশুরের লড়াইয়ের এ খবর এখন পুরনো। আসনে জাতীয় পার্টির দুবারের সাংসদ জিয়াউল হক মৃধা, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতিসহ আওয়ামী লীগের চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াও এ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রেজাউল ইসলাম সাংসদ জিয়াউল হকের জামাতা।

এই আসনে সাংসদ জিয়াউল হক মৃধার সঙ্গে তার জামাতা রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে। এখানে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। আসনটি জোটের জন্য রেখে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

ভোটের লড়াইয়ে শ্বশুর-জামাইয়ের মধ্যে সম্পর্কটা সাপে-নেওলে হয়ে উঠেছে। কেউ কারও মুখ দেখা দূরে থাক, কথাও সহ্য করতে পারছেন না। শ্বশুর জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি জিয়াউল হক মৃধাতো বলেই ফেললেন- তার মৃত্যুর পর জামাইকে যেন মরদেহ দেখতে দেয়া না হয়। জানাযাতেও যেন অংশ নিতে না পারে।

এর আগে জাপা থেকে রেজাউল ইসলামের মনোনয়ন পাওয়ায় তাঁর শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধার পক্ষের লোকজন গত মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন।

গতবার এই আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন জিয়াউল হক মৃধা। তিনি আগেও একবার এমপি ছিলেন। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ছাড়াও জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন জিয়াউল হক মৃধা। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি জাতীয় পার্টির অন্যতম মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু, দল তার পরিবর্তে জামাই অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াকে মনোনয়ন দিয়েছে।

মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে গত বুধবার দু’জনই প্রার্থী থেকে গেছেন। দলের প্রার্থী হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন জামাই রেজাউল ইসলাম। তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের যুববিষয়ক উপদেষ্টা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের ভোটার। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জিয়াউল হক মৃধা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে রেজাউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, দ্বন্দ্ব বলে কিছু নেই। দলের সিদ্ধান্তে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এখানে ব্যক্তিগত কোনো ব্যাপার নেই। উনি (জিয়াউল হক মৃধা) শ্রদ্বেয় ব্যক্তি। বাবার মৃত্যুর পর তাকেই আমি বাবা বলে মান্য করি। আমি মনে করি, মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে তিনিও আমার পক্ষে কাজ করবেন।

রেজাউল ইসলাম আরও বলেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছেলে, এই এলাকায় আমি বড় হয়েছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ নির্বাচনী এলাকায় ২০০৮ ও ২০১৪ সালে শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধার চিফ নির্বাচনী এজেন্ট ছিলাম। সবার সঙ্গে চেনাজানা আছে।

এ দিকে জিয়াউল হক মৃধা বলেন, আমি তার জন্য কোনো কাজ করব না। আমি স্বতন্ত্র হিসেবে তার বিরুদ্ধে লড়াই করব। তাকে কোনো ছাড় দেব না।

তিনি বলেন, আমিই তার সিনিয়র, আল্লাহ চাইলে আগে মরব। মৃত্যুর আগে আমি ওসিয়ত করে যাচ্ছি, আমার মৃত্যুর পর সে (রেজাউল ইসলাম) যেন আমার লাশ না দেখে, জানাযাতেও অংশ না নেয়।

এদিকে, রেজাউল ইসলামকে মনোনয়ন দেয়ায় জাপার তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গত ২৭ নভেম্বর সরাইলের কুট্রাপাড়া মোড়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে নেতাকর্মীরা।

Bootstrap Image Preview