বরিশাল শহরের উপকণ্ঠে কালিজিরা ব্রিজ সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর তীরে ইকো বিল্ডাস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন করছে ইটের বিকল্প পরিবেশবান্ধব হলো ব্লোক ও অটো ব্রিকস। এই ব্লোক ও ব্রিকস তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বালুর সাথে পাথরের গুঁড়া, সিমেন্ট ও ড্যামপ্রুভ কেমিক্যাল। ড্যামপ্রুভ কেমিক্যাল ব্যবহারের দরুন এই ব্লোক ও ইটগুলোতে কোন প্রকার নোনা ধরবে না। তাই ব্লোকগুলোর স্থায়ীত্ব বৃদ্ধির পাশাপশি দীর্ঘদিন রং অটুট থাকে।
শুরুতে স্বল্প পরিসরে হলেও আগামীতে আরো বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনে যাবে এই শিল্প কারখানা। এই প্রতিষ্ঠানে অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রে প্রকাশ, জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত নির্মাণসামগ্রীর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে বাড়ি তৈরিতে ইটের ব্যবহার বাড়ছে দ্রুত তালে। ইট তৈরিতে মাটির উপরিভাগ কেটে ফেলায় জমির উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে। সেই সাথে ইট পোড়াতে হচ্ছে কাঠ-কয়লা দিয়ে। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ মারাত্বক ভাবে দূষিত হচ্ছে। অথচ ইটের পরিবর্তে হলো ব্লোক দিয়ে ঘর তৈরি করলে খরচ পড়ে অনেক কম। আর এই ব্লোক তৈরিতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না।
ইকো বিল্ডাস কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, প্রায় পাঁচটি ইটের সমান একটি হলো ব্লোক। বাজারে প্রথম শ্রেণীর পাঁচটি ইটের মূল্য প্রায় ৬০ টাকা। অথচ একটি হলো ব্লোকের মূল্য মাত্র ৪৫ টাকা। এই ব্লোক দিয়ে ঘর নির্মাণে সিমেন্টের খরচ ও মজুরি কম প্রয়োজন হয়। ব্লোকের মাঝখানে ফাঁকা থাকায় বাইরের তাপ ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। তাই গরমের সময় ঘর থাকে শীতল। হলো ব্লোক দিয়ে তৈরী ঘর রং করার প্রয়োজন হয় না। তারা জানান, বর্তমানে আমাদের একটি মেশিন দিয়ে প্রতিদিন দশ হাজার ব্লোক তৈরি হচ্ছে। চায়না থেকে আমদানি করা এই মেশিন দিয়ে প্রতিদিন ৫০ হাজার হলো ব্লোক তৈরি করা সম্ভব বলে জানান তারা।
ইকো বিল্ডাস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন হাওলাদার জানান, সুলভ মূল্যে আমরা আমাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারছি। ইতোমধ্যে হলো ব্লোক ব্যবহারের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছেন। বর্তমানে কারখানায় ৩০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। সম্পূর্ণ উৎপাদনে গেলে এখানে ২০০ শ্রমিক কাজের সুযোগ পাবেন বলেও জানান তিনি।