বিএনপির রাজনীতিতে যুগ্ম মহাসচিব পদে থাকা নেতাদের গুরুত্ব আলাদা। এই পদাধিকারীকে মধ্যম সারির নেতা ধরা হলেও দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে যুগ্ম মহাসচিবদের বড় ভূমিকা থাকে।
রাজপথের সক্রিয় ও পোড় খাওয়া নেতাদেরই এ পদে আনা হয়। গুরুত্ব দেয়া হয় অঙ্গসংগঠন যেমন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সফল নেতাদের।
যুগ্ম মহাসচিবরা বিএনপির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও এবার ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির তিনজন গুরুত্বপূর্ণ যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচন করছেন না।
তাদের মধ্যে দুজন কাঙ্ক্ষিত আসনে মনোনয়ন না পাওয়ায় নির্বাচন করছেন না বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। অপরজন দলের মনোনয়নপত্রই সংগ্রহ করেননি।
তারা হলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও হাবিব-উন নবী খান সোহেল।
তাদের মধ্যে রুহুল কবির রিজভীর রয়েছে শক্ত রাজনৈতিক পটভূমি। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন। '৯০-এর গণআন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি।
রুহুল কবির রিজভী বহুদিন ধরে বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি এর আগে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ছিলেন। পরে যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
দলের সংকটময় মুহূর্তে রিজভী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দলের বার্তা সারা দেশের নেতাকর্মীদের মধ্যে পৌঁছে দেন। মাসখানেক টানা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তার থাকার ইতিহাসও রয়েছে।
রিজভী কুড়িগ্রাম কিংবা রাজশাহীর একটি আসন থেকে নির্বাচন করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্রই সংগ্রহ করেননি তিনি।
যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের রাজনৈতিক হাতেখড়ি ছাত্রদলের রাজনীতি দিয়ে। পরে তিনি যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে প্রায় এক দশক সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল একজন সুবক্তা হিসেবে পরিচিত। টিভিতে টকশোয় দলের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আলাল ২০০৮ সালে মোহাম্মদপুর-আদাবর আসন থেকে নির্বাচন করেন। এবার বরিশাল-৫ আসন থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছে বরিশাল-২ আসন থেকে।তাই তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
হাবিব-উন নবী খান সোহেলের রাজনৈতিক পটভূমি খুবেই সুদৃঢ়। তিনি ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। পরে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হিসেবে সারা দেশে এ অঙ্গ-সংগঠনকে মজবুত ভিত্তি দেন।
সোহেল বিএনপির তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয়। দলের পোড় খাওয়া নেতাদের মধ্যে তিনি একজন। তিনি ঢাকার রাজনীতিতে সক্রিয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি পদে রয়েছেন।
সোহেল ঢাকা-৮ আসন থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। এবারও ওই আসন থেকেই তার পক্ষ হয়ে মেয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু বিএনপির হাইকমান্ড তাকে অন্য আসন দিতে চেয়েছিল। তাই তিনি নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।