ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি জানিয়েছেন, আগ বাড়িয়ে কোনো দেশের সঙ্গে যুদ্ধ জড়াতে চায় না তার দেশ। তবে যেকোনো আগ্রাসন প্রতিহত করতে ইরানের সামরিক বাহিনী প্রস্তুত বলে সতর্ক করেন তিনি।
এদিকে দেশটির পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান আলি আকবর সালেহি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সতর্ক করে বলেছেন, পরমাণু চুক্তি ইস্যুতে ইরানের ধৈর্য ক্রমেই কমে আসছে। তবে ইইউ চুক্তি রক্ষার বিষয়ে আবারো প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
ইরানি নৌবাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার রাজধানী তেহরানে নৌ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। তাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে খামেনি বলেন, শত্রুদের আগ্রাসন প্রতিহত করতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরো জোরদার করবে ইরান। সামরিক শক্তি আরো বাড়াতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, ‘শত্রুরা ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের প্রতিহত করতে আমাদের সামরিক বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত। তবে ইরান কারো সঙ্গে আগ বাড়িয়ে যুদ্ধে জড়াবে না। যেকোন উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের জবাব দিতে আমরা দ্বিধা করবো না। বর্তমান ইরানি সামরিক বাহিনী অতীতের যে কোন সময়ের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।’
খামেনির এ বক্তব্যের আগে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি রক্ষার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন ইরানি পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান আলি আকবর সালেহি। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে তেল বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্থ হলে, ইরান কোনভাবেই পরমাণু চুক্তির শর্ত মানবে না।
ইরানের পরমাণু শক্তি কমিশন প্রধান আলি আকবর সালেহি বলেন, ‘পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর ইউরোপের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আমরা কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। যদিও তারা চুক্তি রক্ষার বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করার বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিল। আমরা আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে চাই। তবে ইইউকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ইরানি জনগণের ধৈর্যের সীমা কমে আসছে।’
তবে ইরানের সঙ্গে হওয়া পরমাণু চুক্তি রক্ষার বিষয়ে আবারো প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বুধবার জেনেভায় ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সঙ্গে বৈঠক শেষে জোটের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মোঘেরিনি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে হওয়া পরমাণু চুক্তি রক্ষা এবং প্রতিশ্রুত অর্থনৈতিক সাহায্য করতে ইইউ বদ্ধপরিকর। এছাড়াও সব পক্ষ চুক্তির শর্ত মেনে চলবেও বলে জানান তিনি।
এদিকে ইরানের দ্বিতীয় বৃহৎ তেলক্রেতা ভারত জানিয়েছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর তেহরান থেকে ৩৬ শতাংশ তেল আমদানি বাড়িয়েছে দিল্লি। আগামী দিনে ইরান থেকে তেল আমদানি আরো বাড়ানো হবে বলেও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।