ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সব থেকে দুর্ধর্ষ এবং অভিজাত গোষ্ঠী ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড’কে কোনও কাজ না দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে কাশ্মির উপত্যকায়। প্রায় ছ’মাস ধরে উপত্যকার সেনাশিবিরে থাকলেও এখনও সন্ত্রাস দমনে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি এই ৮০ জন কমান্ডোকে। এমনটাই জানাচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
আনন্দবাজার জানায়, এই ৮০ জন কমান্ডোকে উপত্যকায় পাঠানো হয়েছিল জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের নির্দেশেই। কাশ্মিরের জনবহুল এলাকায় জঙ্গিরা লুকিয়ে থাকায় বিভিন্ন অভিযান চালাতে গিয়ে ব্যাপক হারে মারা যাচ্ছেন ভারতীয় জওয়ানরা।
কমান্ডো অভিযান চালানো হলে নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে নিখুঁত লক্ষ্যে অভিযান চালিয়ে জঙ্গিদের কাবু করা সম্ভব হবে, সেই উদ্দেশ্যেই উপত্যকায় পাঠানো হয়েছিল ৮০ জন কমান্ডোকে। একই সঙ্গে সরাসরি বিভিন্ন অভিযানে যুক্ত থাকলে কমান্ডোদের ক্ষিপ্রতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ ছ’মাস ধরে তাদের দিয়ে বিভিন্ন আধাসামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করানো হয়। কোনও প্রত্যক্ষ অভিযানে তাদের এখনও পর্যন্ত কোনও ভূমিকা নেই।
গত মাসের শুরুতেই কাশ্মিরে গিয়েছিলেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের ডিরেক্টর জেনারেল সুদীপ লাখটাকিয়া। তিনি দেখা করেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক এবং কাশ্মির পুলিশ প্রধান দিলবাগ সিংহের সঙ্গে।
সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান, ‘কোনও বাহিনীকে কীভাবে ব্যবহার করা হবে, তা ঠিক করে রাজ্য প্রশাসনই। আমরা কিন্তু রাজ্যের অনুরোধেই বাহিনী পাঠিয়েছিলাম কাশ্মিরে। আমরা থাকলে যে কোনও অভিযানের গতি ও ক্ষিপ্রতা অনেক বেড়ে যায়।’
এই মুহূর্তে ভারতীয় সেনা ছাড়াও অন্যান্য আধাসামরিক বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে কাশ্মিরে। প্রতিটি বাহিনীকেই নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। অথচ সব থেকে দুর্ধর্ষ শক্তিকেই রীতিমতো বসিয়ে রাখা হয়েছে। কোনও দায়িত্ব না থাকায় আপাতত বিএসএফের হুমহামা সেনাঘাঁটিতে প্রায় ‘ছুটি’ কাটাচ্ছেন ৮০ জন এলিট কমান্ডো।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, কাশ্মিরে ইতিমধ্যেই বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তারক্ষীর উপস্থিতি রয়েছে। তাই নতুন করে আর কমান্ডোদের কাজে লাগানোর কথা ভাবছে না কাশ্মির প্রশাসন।
এই বছর কাশ্মির জুড়ে সংঘর্ষের ঘটনা রেকর্ড সংখ্যক বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৫০টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। মারা গেছেন প্রায় ৮৫ জন নিরাপত্তারক্ষী। সেনার পাল্টা আক্রমণে নিহত হয়েছে প্রায় ২৩০ জন বিচ্ছিন্নতাবাদীও।